জাতীয় সংবাদ

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

এফএনএস: আজ রোববার ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে এই দিনে একদিকে স্বজন হারানোর বেদনা ঘনীভূত হয়, অন্যদিকে বিজয়ের চূড়ান্ত ক্ষণ নিকটবর্তী হয়। স্থানে স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর্মুখী আক্রমণে পরাভূত পাকস্তানী বাহিনী। দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঘটনা বেড়ে চলে। মুক্ত স্বাধীন জনপদে পৎ পৎ করে উড়তে থাকে বাংলাদেশের পতাকা।

এদিন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাকসেনাদের প্রতিহত করে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করে। পূর্বপাকিস্তান রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পাকসেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চালীয় কমান্ডের জিওসি লেফট্যানেন্ট জেনারেলে আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর সাথে পরামর্শের ভিত্তিতে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের গবর্নর ডা. এম এ মালিক বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তার জবাব এসেছিল ৮ ডিসেম্বর। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক টেলেক্স বার্তায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য গভর্নরকে নির্দেশ দেন। এরপর কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে পাকসেনারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পাকবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিভিশন অকেজো হয়ে পড়ে। দেশের দক্ষিণে খুলনাতেও আটকে পড়ে পাকসেনারা। উত্তরে ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মার মধ্যবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকায় তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। জামালপুর, মোমেনশাহী এবং চট্টগ্রামেও পাকসেনারা শোচনীয় পরাজয় বরণ করে।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে ডিসেম্বরের অষ্টম দিন পাকিস্তানী বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়ে ভারতীয় মিত্রবাহিনী প্রধানের ঘোষণা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হতে থাকে। এরপরই মূলত পাকবাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়। এভাবেই স্বাধীনতার সংগ্রাম এগিয়ে যেতে থাকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। অপ্রতিরোধ্য বাঙালিদের অগ্রযাত্রায় এদিন মুক্ত হয় মৌলবীবাজার, বরিশাল, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। মুক্ত জনপদবাসী বিজয় উল্লাসে যেতে ওঠে।

এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এদিন এক বেতার ভাষণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বীকৃতী দিতে ভারত ও ভুটানের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর কাছে আবেদন জানান।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button