বড় চ্যালেঞ্জে দেশের পোশাক শিল্প

পোশাক শিল্পের সংকট দিন দিন বাড়তে শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখা এই খাতটি। কমেই চলেছে ক্রয়াদেশ। গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্রয়াদেশ কমেছে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। অর্ডার না থাকায় এবং আর্থিক সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছোট অনেক কারখানা। বেকার হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা। তাই বড় সংকটের মধ্যে পড়েছে এই শিল্প। বস্ত্র ও তৈরি পোশাকশিল্পে অনেক কারখানা এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের সময়মত বেতন দিতে পারছে না, এতে পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে অনেক শিল্প কারকানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আরও বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হতে পারে যে কোনো সময়। প্রত্যেক কারকানায় ছাঁটাই শুরু হয়েছে শ্রমিক। ফলে হতে পারে শ্রমিক অসন্তোষ। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো অর্ডার পেলেও মাঝারি বা ছোট আকারের প্রতিষ্ঠানগুলো অর্ডার পাচ্ছে না একদমই। ফলে এ ধরনের কারখানাগুলোকে ভুগতে হচ্ছে বেশি। কোনো কোনো কারখানা উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেক অর্ডারও পাচ্ছে না। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে গত বছরও সারা দেশে ৫১০টি শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে আশুলিয়া এলাকায় ৯৬টি, গাজীপুরে ১৫৭টি, চট্টগ্রামে ৮০টি, নারায়ণগঞ্জে ২০টি, ময়মনসিংহে ছয়টি এবং খুলনায় বন্ধ হয় ১৫১টি কারখানা। ক্রয়াদেশ না পাওয়া ছাড়াও শ্রমিক অসন্তোষের কারণেও অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রোজার ঈদের আগে ও পরে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম সহ বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানায় বেতন না পাওয়ায় আন্দোলনও করে শ্রমিকরা। সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মকা- বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এর জেরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণের উচ্চ সুদহার, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা, উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে দুর্বলতা এবং জটিল আর্থিক পরিবেশ রপ্তানি খাতের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশাগুলোকে আগামী দিনে আরও সংকুচিত করে দিতে পারে। একই সঙ্গে দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব এ খাতে পড়েছে। এখন নতুন মাথাব্যাথার কারন পোশাক শিল্প। আর এর প্রধান কারন হচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর ক্রয়াদেশ কমে গেছে। এসব দেশগুলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় গ্রাহক। এসব বাজারে রপ্তানির জন্য পাইপলাইনে থাকা পণ্যের ক্রয়াদেশ স্থগিত হওয়ায় বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, সে তুলনায় পণ্যের দাম বাড়েনি। করোনায় সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েছিল। রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসব প্রণোদনা আছে, তা আরও বাড়ানো দরকার। প্রতিবছর পোশাকশিল্পে মূল্য সংযোজনের হার বৃদ্ধি বন্ধসহ সরকারকে নানা পদক্ষেপ নিতে হবে। পোশাক শিল্পের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সরকারের অব্যাহত সহায়তার কোনো বিকল্প নেই। সরকারকে পোশাক তৈরির শিল্প খাতে যাথযথ নজর দিতে হবে।