সম্পাদকীয়

নগদ টাকার সংকটে মানুষ দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে

নিরাপত্তার অভাবে বেশিরভাগ ব্যাংকের এটিএম বন্ধ থাকায় নগদ টাকার সংকটে পড়েছেন সাধারন মানুষ। এ ছাড়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে দেশজুড়ে যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তাতে ব্যাংকের সব শাখাও খোলেনি। সব মিলিয়ে তাই নগদ টাকার সংকটে পড়েছেন মানুষ। দেশের বেশির ভাগ এটিএমে অর্থ সরবরাহের কাজটি করা হয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষের এ সেবা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বেশির ভাগ এটিএমে টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বন্ধ হয়ে গেছে দেশজুড়ে বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএম সেবা। গত কয়েকদিন ধরে মতিঝিল, দিলকুশা ও পল্টন এলকার এবি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের একাধিক এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেননি সাধারণ মানুষ। বুথে টাকা না থাকায় এমন সংকট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাস শেষে দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের মোট এটিএমের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৪২৮। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৯ হাজার ৪০৯টি আর গ্রামাঞ্চলে ৪ হাজার ১৯টি। এটিএম ছাড়া সিআরএমের (ক্যাশ রিস্লাইকিং মেশিন) মাধ্যমেও নগদ টাকা উত্তোলন করা যায়। জানা যায়, দেশের বেসরকারি খাতের ব্র্যাক, সিটি, ঢাকা ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক এখন এটিএমের বদলে সিআরএমের প্রতি ঝুঁকছে। সিআরএমে টাকার উত্তোলনের পাশাপাশি নগদ জমারও সুযোগ রয়েছে। এ কারণে ধীরে ধীরে সিআরএমের সংখ্যা বাড়ছে। গত মে মাস শেষে দেশে সিআরএমের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৫০। এসব সিআরএমের সিংহভাগই শহরাঞ্চলে, যা ৩ হাজার ৯৮৫টি। কিছু গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী জানা যায়, রাজধানীর বেশিরভাগ এটিএম ও সিআরএম বুথে টাকা নেই, আবার কিছু কিছু বুথ বন্ধ রয়েছে। এতে টাকা তুলতে বেগ পেতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের। বন্ধ থাকা বেশিরভাগ ব্যাংকের বুথের নিরাপত্তাকর্মীদেরও পাওয়া যায়নি। যাদের পাওয়া গেছে তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার অভাবে বুথগুলোতে টাকা সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। যদিও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংকসহ অল্প কিছু ব্যাংকের এটিএম বুথ খোলা রয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে টাকা পরিবহনের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না অনেক ব্যাংক ও এটিএমে অর্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও চাহিদা অনুযায়ী নগদ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এমন সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে দ্রুত স্বস্থি ফিরিয়ে আনতে হবে সংশ্লিষ্টদের। বর্তমান অন্তর্বরতিকালীন সরকারকে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। না হলে চরম ভুক্তভুগি হবে সাধারণ মানুষ।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button