সম্পাদকীয়

দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে সোনা চোরাচালান

কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না স্বর্ণ চোরাচালান। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে আসছে বিপুল পরিমাণ সোনা, যা সীমান্তের ৩০ জেলা দিয়ে পাচার হচ্ছে ভারতে। আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাকারবারি চক্রগুলো দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই বাংলাদেশকে তাদের চোরাচালানের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। কেননা, অর্থনীতি ধ্বংস করছে সোনা চোরাচালান। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সর্বোচ্চ নজরদারি প্রয়োজন। যদিও আইনে ১২ বছর পর্যন্ত কারাদ- এবং ২০ (বিশ) লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে, অপরাধীর মূল হোতা আড়ালে থেকে যায় এবং ধরা পড়ে চুনো-পুঁটিরা। কিন্তু সেক্ষেত্রেও আইনের বেড়াজালে জামিনে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে চুনো-পুঁটির দল। ফলে চোরাচালান চলছে তাদের নিজস্ব গতিতেই। দেশে অবৈধ সোনা আসে আকাশপথ, সমুদ্রপথ ও স্থলপথে। সেই সোনা সাত জেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হচ্ছে ভারতে। সোনা চোরাচালান বন্ধে এর আগে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে একাধিক পত্র দেওয়া হলেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে সোনা ও হীরা চোরাচালান, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ও অর্থপাচার এবং চোরাচালান বন্ধে আইন- প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নীরবতায় হুমকিতে পড়েছে জুয়েলারি শিল্প। হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে প্রচুর সোনার বার, সোনার অলংকার ও হীরা খচিত অলংকার দেশে প্রবেশ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে বিমানে কর্মরত কর্মীরাও স¤পৃক্ত থাকার বেশ কয়েকটি ঘটনায় প্রমাণ পাওয়া যায়। এ অবস্থায় সারাদেশে সোনা ও হীরা চোরাচালান, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ও অর্থপাচার এবং চোরাচালান বন্ধে সকল আইন- প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযান চালাতে হবে। নিরাপদে দেশে আসছে চোরাচালানের বিপুল পরিমাণ সোনা ও হীরার চালান। আবার একইভাবে পাচার হচ্ছে। এটাই প্রতিষ্ঠিত সত্য। দেশে অবৈধভাবে আসা সোনা ও হীরার সিকি ভাগও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের নজরে আসছে না। এই পরিস্থিতি উত্তরণে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি প্রয়োজন। এ ছাড়া সোনার বাজারের অস্থিরতার নেপথ্যে জড়িত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কাস্টমসসহ দেশের সকল আইন- প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের জোরালো অভিযান ও শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সোনার বাজারে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর অভিযানের বিকল্প নেই। তাই অবৈধ উপায়ে কোনো চোরাকারবারি যেন হীরা ও সোনা অলংকার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। চোরাচালান প্রতিরোধে পৃথকভাবে সরকারি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button