সম্পাদকীয়

প্রবাস আয় আরো বেগবান করতে উদ্যোগ নিন

সম্প্রতি ডলারের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। ফলে লেনদেনের ভারসাম্যে ইঙ্গিতপূর্ণ ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এটি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হবে কি না, তা নির্ভর করবে আগামী দিনের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর। দেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎসংকট বেড়েছে। গ্যাসের অভাবে শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দামের লাগাম টেনে ধরা মুশকিল হয়ে পড়ছে। সরকারি আয়ের অন্যতম বড় উৎস রাজস্ব আহরণে ঘাটতি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নেওয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি মূল্যস্ফীতি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও স্বস্তি মিলছে না। কমেনি ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরবস্থায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস প্রবাসী আয় গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। প্রবাসীদের অতি কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ মজবুত হয়েছে অর্থনীতির ভিত। বর্তমানে অর্থনীতির জন্য সুখবর দিচ্ছে রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয়। রেমিট্যান্সযোদ্ধারা তাঁদের কথা রাখছেন। গণ-আন্দোলনের সময় বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর গতি কমিয়ে আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন প্রবাসীরা। শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও অন্তর্র্বতী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাঁরা পুনরায় বৈধপথে দেশে অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে প্রতি মাসেই বাড়ছে প্রবাস আয় দেশে আসার পরিমাণ। সদ্যঃসমাপ্ত অক্টোবর মাসে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এর ফলে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে, যা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, তার পরের মাসগুলোতে তা অব্যাহতভাবে বেড়েছে। একই ধারায় অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলারের। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৯২৭ কোটি টাকার প্রবাস আয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত কোটি ৭৩ লাখ ডলার বা ৯২৭ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। এর ধারাবাহিকতাকে বেগবান করতে সরকারকে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের সম্মানিত করা হলে এবং রেমিট্যান্সের বিপরীতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে এই ধারা আরো বেগবান হবে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কেটে যাবে। আমরা মনে করি, বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসাকে নানাভাবে উৎসাহিত করতে হবে। পাশাপাশি হুন্ডি ব্যবসার দৌরাত্ম্য কমাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button