ফুটপাত দখলমুক্ত হোক
![](https://dailyprobaha.com.bd/wp-content/uploads/2023/11/post-fp.webp)
ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে অবৈধ দখলদাররা দোকানপাট বসিয়ে দিব্যি ব্যবসা করে আসছে। শহরের ফুটপাতগুলো দুই দিক দিয়ে দখলের ফলে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটে, সেই সাথে দেখা দেয় প্রচ– যানজট। যার ফলে শহরের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। ব্যস্ততম নগরীতে পথচারীদের নিরাপদে হাঁটা ও চলাচলের উপযুক্ত স্থান ফুটপাত। প্রশস্ত ফুটপাতের কারণে যানজট বা দুর্ঘটনাও কমে অনেক। পাশাপাশি রাস্তা বা সড়কের সৌন্দর্যও বাড়ায় ফুটপাত। যানজটমুক্ত রাখতে ফুটপাত দিয়ে স্বল্প দূরত্বে হেঁটে চলারও কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেই ফুটপাত দখল করে বসেছেন হকার। সেখানে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার জমজমাট ক্রয়-বিক্রয়। কী নেই ফুটপাতজুড়ে! দেখে বোঝা যাবে না, এটি ফুটপাত নাকি ব্যবসাকেন্দ্র। হাঁটার জায়গাজুড়ে পণ্যসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে রাখেন ব্যবসায়ীরা। পথচারীরা ফুটপাতে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় হাঁটেন, সেখানেও একই অবস্থা। রাস্তা দখল করে নির্মাণসামগ্রী, গাড়ি পার্কিং আর হকারদের ব্যবসা ও চায়ের দোকান। বিগত সরকার বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েও দখলমুক্ত করতে পারেনি রাজধানীর ফুটপাতগুলো। এবার নতুন করে যৌথ অভিযানের মাধ্যমে উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে বর্তমান সরকার। তবে সেখানেও পূর্বের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। রাজধানীর সবচেয়ে বেশি যানজট প্রবণ গুলিস্তান ও ফার্মগেটের আশপাশের এলাকাকে হকার ও অবৈধ দখলমুক্ত করতে ডিএমপি (ট্র্যাফিক) সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করেছে যৌথ বাহিনী। সেনাবাহিনীর সহায়তায় গুলিস্তানে হকারদের ৫শতাধিক গাড়ি ও ফার্মগেটে শত শত অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। যানজট ও গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা অব্যবস্থাপনা রাজধানী ঢাকার নাগরিক সমস্যাগুলোর অন্যতম। সিটি কর্পোরেশন এবং প্রতিটি সরকারই ঢাকার যানজট কমিয়ে আনা এবং ফুটপাত, রাস্তা ও উন্মুক্ত স্থানগুলোকে অবৈধ দখলমুক্ত করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। রাজধানীর চারপাশের নদনদী, খাল, উন্মুক্ত স্থান ও ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন সময়ে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জনস্বার্থের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলেও বিগত ১৬ বছর তা থোড়াই কেয়ার করা হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ ও দলীয় ক্যাডারদের প্রভাবে সবকিছু পরিচালিত হওয়ায় জনস্বার্থ ও জনদুর্ভোগের বিষয়গুলো বরাবরই উপেক্ষিত হয়েছে। রাজধানীর ফুটপাত দখল ও চাঁদাবাজ মুক্ত করতে যৌথবাহিনীর চলমান অভিযান নিয়ে জনমনে যে স্বস্তি ও আশাবাদ দেখা যাচ্ছে তা আর অতীতের মত ইঁদুর-বেড়াল খেলায় পরিণত হবে না, এমনটাই সকলের প্রত্যাশা। অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। কেউ যাতে নতুন করে দখল-চাঁদাবাজি করতে না পারে সে লক্ষ্যে মনিটরিংসহ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। আইন ও নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হলে তার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।