সম্পাদকীয়

জুয়ার আধিপত্য নির্মূল করুন, সমাজকে রক্ষা বাঁচান

জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি। জুয়ার মাধ্যমেই একটি সমাজে ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে। তাই জুয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু কে শুনে কার কথা। আইনের তোয়াক্কা না করেই মানুষ প্রতিনিয়ত জুয়ার আড্ডায় মেতে উঠছেন। এতে উৎসাহ পাচ্ছে যুব সমাজ এবং শিক্ষার্থীরা। যার প্রভাব অনেক ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। জুয়ার এমন ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হলেও কিছু কিছু জায়গায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জুয়ার আসর চলে জাঁকজমক ভাবেই। তবে এমন জুয়ার দৌরাত্ম্য মোকাবেলায় বর্তমান সরকার কতটুকু ভূমিকা রাখছে তাই দেখার বিষয়। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, ঢাকার ধামরাইয়ে কুশুরা এলাকায় অবাধে চলছে জুয়ার আসর। কুশুরা ইউনিয়নের কুশুরা নবযুগ কলেজঘেঁষা বংশী নদীর পশ্চিম পাশে লেবুবাগানের মধ্যে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা চলে প্রতিদিন। পত্রপত্রিকার খবরাখবর থেকে জানা যায়, প্রায় একমাস ধরে চলছে এই খেলা। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এই খেলা। গাজীপুরের কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া-সিংগাইর ও ঢাকার সাভারসহ আশপাশের উপজেলা থেকে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে জুয়াড়িরা জড়ো হয় জুয়ার আসরে। মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে উঠতি বয়সের ছেলেদের এই খেলায় আসক্ত করা হচ্ছে। এর পাশেই রয়েছে স্বনামধন্য নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়, হামিদা আফাজ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কুশুরা দাখিল মাদ্রাসা। জুয়া খেলার প্রভাব এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝেও বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি করছে। জুয়াড়িরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পান না। অভিযোগ রয়েছে, সর্বস্ব হারিয়ে নবাগত জুয়াড়িরা প্রতিনিয়ত খোঁজে নিচ্ছে অসদুপায়। তাদের মধ্যে অনেকেই জুয়া খেলার টাকা জোগাড় করতে এলাকায় চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এতে এলাকায় আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রশাসনের তৎপরতা ও পুলিশি কার্যক্রম গতিশীল না থাকাকে দায়ী করছে এলাকাবাসী। এই বিষয়ে প্রশাসন যত দুর্বল থাকবে ততই জুয়াড়িরা তৎপর হয়ে উঠবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের এমন অপকর্মের প্রভাব থেকে বাঁচাতে উদ্যোগী হওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করছি। এই বিষয়ে নজরদারি করে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে প্রশাসনকে। এক্ষেত্রে স্থানীয় যাদের অধীনে এসব কর্মকা- পরিচালিত হয় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সর্বোচ্চ আইন প্রয়োগ করা হোক। আমরা প্রত্যাশা করছি, দ্রুতই ওই স্থানের সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button