কর্মসংস্থান ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত হোক

কর্মক্ষম ব্যক্তি বিশেষত তরুণরা উৎপাদনশীল কাজ করতে চায়, যে কাজের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি হবে। সেইসাথে কর্মনিয়োজনের একটি স্বীকৃতিও থাকতে হবে। সুতরাং এই মুহূর্তে নতুন সরকারকে দেশে স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টার সাথে সাথে সামগ্রিক উন্নয়ন কৌশলের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। সেই পথে অর্থনীতি ও উন্নয়ন এমনভাবে এগোতে হবে যে বৈষম্য দূর করার প্রচেষ্টা যেন স্পষ্ট হয়। যত দ্রুত এগুলো মনোযোগ পায় তত মঙ্গল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যেসব অর্জন হয়েছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে এই অনুধাবন যে বৈষম্য দূর করা আর দেশের সবাইকে উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখনই এই পথ পুরো নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। ধারাবাহিকভাবে পূর্ণাঙ্গ কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এই কৌশল প্রণয়ন চলতে থাকার সময়টুকুতেও কিছু পরীক্ষামূলক কার্যক্রম, উদাহরণ তৈরির প্রচেষ্টা হাতে নেওয়া যায়। সব কর্মক্ষম ব্যক্তি উন্নয়নের জন্য কাজ করতে না পারলে ক্ষমতাশালী ও ক্ষমতাহীনদের মধ্যে দূরত্ব তৈরী হয়। তখন মনে হয় দেশটা ওদের। এই “ওদের” নামে যে অন্যপক্ষ তারা উন্নয়নের নামে কিছু সুবিধাভোগী তৈরি করে ও তাদের সমর্থন আদায় করে। এভাবেই বিগত দশ পনোরো বছরে দেশে বৈষম্যের পাহাড় গড়ে উঠেছে। তাতে শিল্প-কৃষি-সেবা খাতে যেসব সম্ভাবনা বিকশিত হতে পারতো, তা হারিয়ে গিয়েছে। একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান শর্ত হলো সে দেশের জনগণের সঠিক কর্মসংস্থান। আর আমরা কর্মসংস্থান বলতে বুঝি ‘পরিশ্রমের বা কাজের বিনিময়ে টাকা’। একজন কর্মচারী এবং একজন নিয়োগকর্তার একটি প্রচেষ্টা বা কোনো ব্যক্তির ব্যবসা বা উদ্যোগ শ্রম ও দক্ষতার স্বরূপ অবদান রাখে এবং একটি নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগ দেওয়া হয়। দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি থাকে, একপক্ষ কাজ করবে এবং অন্যপক্ষ বিনিময় মূল্য দেবে। কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যই অর্থ সংগ্রহ। এছাড়া এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কাজ করার ইচ্ছে, কাজ সংগ্রহের প্রচেষ্টা এবং কাজ সম্পাদন করা। কর্মসংস্থান’ শব্দটি প্রতিটি জীবনের সঙ্গে এবং জীবনের প্রতিটি বাঁকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সুষ্ঠু কর্মসংস্থানের জন্য একটি দেশে সবার আগে প্রয়োজন শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি। এখন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সরকারি খাত তো আছেই, এর সঙ্গে বেসরকারি খাতের বাজার সম্প্রসারিত করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে যেন বিদেশ থেকে জনশক্তি না এনে দেশের মেধাবীদের যেন নিয়োগ দেওয়া হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।