সম্পাদকীয়

সরকারের হস্তক্ষেপ আরও বাড়াতে হবে

আসন্ন রমজানে বাজার পরিস্থিতি

আগামী মার্চ মাসে শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। চাহিদার তুলনায় সরবরাহের ঘাটতি না ঘটলেও শবেবরাত ও রোজা এলে বাজারে ভোগ্য পণ্যের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। রোজার মাসে বেশি প্রয়োজন পড়ে এমন ভোগ্য পণ্য আমদানি করা হয়। জানা গেছে, বাড়তি চাহিদার এই সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এ জন্য নতুন করে ডাল ও চিনি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী প্রায় এক কোটি নি¤œ আয়ের পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ও ১৫ হাজার টন চিনি কিনবে সরকার। বাজারদরের তুলনায় প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ১৭ টাকা ৯ পয়সা এবং চিনি ১০ টাকা কম পড়বে। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে টিসিবির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় দুই লাখ ৮৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৯২ হাজার ৯৫০ টন মসুর ডাল কেনার চুক্তি করেছে সরকার। টিসিবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় এক লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পর্যন্ত ক্রয়চুক্তি হয়েছে ২০ হাজার মেট্রিক টন এবং দুটি স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে আরো ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি। কিন্তু তার পরও কি রমজানে ভোগ্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে? এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে ব্যবসায়ীরা ভোজ্য তেলের দাম বাড়িয়ে দেন। অনেক আমদানিকারকের কাছে আগের বছরের অবিক্রীত প্রচুর ছোলা থেকে গেলেও রমজানে ছোলার দাম বাড়বে না এমন নিশ্চয়তা নেই। সাধারণ বিশ্লেষণেই দেখা যায়, আমাদের বাজারে কোনো ধরনের যুক্তি বা নীতি-নৈতিকতার বালাই নেই। কোনো কারণে বাজারে কোনো পণ্যের কিছুটা সংকট হলে অথবা অবৈধ মজুদের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হলে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে। আর এ জন্য ব্যবসায়ীদের অজুহাতের অভাব হয় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেওয়া হয়। পবিত্র রমজান, ঈদ বা অন্য কোনো উৎসবের আগেও দেখা যায়, প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এর কারণ কী? বাজারসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, রমাজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে সামগ্রিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। সরকারের বাজার মনিটরিং কমিটির টাস্কফোর্স, ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশন, ট্যারিফ কমিশনসহ বাজার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে আরো তৎপর হতে হবে। বাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ আরও বাড়াতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখতে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে এটাই প্রত্যাশা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button