সম্পাদকীয়

সমস্যা দূর করুন

আয়কর রিটার্ন

টানা দু-দফায় আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর পরও কাক্সিক্ষত রিটার্ন জমা না পড়ায় তৃতীয় দফায় সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর পরও রিটার্ন জমায় গতি আসেনি।
গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ৩৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭ জন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন ১৩ লাখ ১৮ হাজার ২৪১ জন। গত বছর একই সময় ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৮১ জন রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার জন করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। বছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৪৩ লাখেরও কিছু বেশি। জানা যায়, বর্তমানে অনলাইনে রিটার্ন জমায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়েছেন করদাতারা। এর মধ্যে রয়েছে সার্ভারে অতিরিক্ত চাপ, সংশোধনী রিটার্নের সুযোগ না থাকা, রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা, রিটার্নের ফাইনাল প্রিভিউ ডাউনলোডে সমস্যা, সোনা বা ফার্নিচারের মূল্য অজানা অপশন না থাকায় শূন্য দেওয়া, কল সেন্টারে ফোন দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া করদাতারা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণেও রিটার্ন জমায় ভাটা পড়েছে। করদাতারা সংসারের খরচ জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। মূলস্ফীতির কারণে ক্রমাগতই কমছে তাঁদের প্রকৃত আয়। এই অবস্থায় তাঁরা কর প্রদানের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। কর আদায় কম হওয়ার আরেকটি বড় কারণ মনে করা হয়, রাজস্ব আদায়কারীদের দুর্নীতি। এ ছাড়া কর আদায়ে জটিল পদ্ধতি অনুসরণ, করদাতাদের হয়রানি করাসহ অন্যান্য কারণেও মানুষ কর প্রদানে নিরুৎসাহ হয় বলে অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা। উন্নত দেশগুলোতে নাগরিকরা উন্নত সেবা পাওয়ার লক্ষ্যে অনেক বেশি কর দিয়ে থাকেন এবং কর প্রদানকে তাঁরা নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করেন। আমাদের মতো দেশগুলোতে করের পরিমাণ যেমন কম, কর প্রদানের হারও কম। তার পরও কর প্রদানে এক ধরনের অনীহা কাজ করে। তাই, শুধু সময় বৃদ্ধি করা নয়, কর প্রদানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। কর প্রদানে জনগণের আগ্রহ বাড়াতে হবে এবং পদ্ধতি আরো সহজ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button