প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরান খানের দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা
প্রবাহ ডেস্ক : দলের মহাসচিব ওমর আইয়ুবকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছে পিটিআই। আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে আলোচনা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন দলের নেতা আসাদ কায়সার। সূত্র বলছে, কায়সারের নেতৃত্বে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইমরান খান। কায়সারকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সব সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন তিনি। এ ছাড়া সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কায়সার বলেছেন, ‘পিটিআইর মহাসচিব ওমর আইয়ুব খান প্রধানমন্ত্রী পদে দলের প্রার্থী হবেন। ইমরান খান তাকে মনোনীত করেছেন। তিনি বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। আত্মগোপনে থেকেই তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে কারচুপির ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।’ প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত ওমর আইয়ুব খান পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক মার্শাল আইয়ুব খানের (১৯৫৮-১৯৬৯) নাতি। ২০১৮ সালে ইমরান খানের হাত ধরে পিটিআইতে যোগ দেন তিনি। ইমরান খানের সরকার আমলে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। প্রথমে বিদ্যুৎমন্ত্রী, এরপর পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এবং সবশেষ অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন ওমর আইয়ুব খান। ইমরান খান গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওমর আইয়ুবের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগহ আরও কয়েকটি ঘটনার তদন্ত চলার কারণে তিনি সম্প্রতি আত্মগোপনে আছেন। অনুপস্থিত থেকেও ওমর আইয়ুব নিজ আসন থেকে নির্বাচনে লড়েছিলেন।
শনিবার পাকিস্তানে বিক্ষোভ
পিটিআইকে ‘কোণঠাসা করার’ প্রতিবাদে আজ শনিবার পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে দলটি। গত বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান গহর আলী খান এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘জিডিএ, জেআই, জেইউআই-এফ, পিএলপি, এএনপি অথবা অন্য যেকোনো দল যারা বিশ্বাস করে জনগণের রায় পাল্টে দেওয়া হয়েছে এবং কারচুপি হয়েছে-আমরা তাদের সবাইকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ গহর আরো বলেন, ‘শনিবার বিকেলে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করবে পিটিআই। এতে অংশ নিতে জনগণকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আমরা জনগণের রায় চুরি হতে দেব না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চান ইমরান
পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার সাইফ বলেন, ‘ইমরান খান চাইছেন, যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে কারচুপির বিষয়ে নজর রাখুক এবং এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুক।’ ইমরানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সর্বত্র স্বৈরশাসক ও দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থন দিয়েছে। তবে ওয়াশিংটনের সামনে এখন ভুল সংশোধনের সুযোগ আছে।’ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্বেগের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বেলুচ বলেছেন, ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়া পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সার্বভৌম বিষয়। পাকিস্তান তার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
কারচুপির অভিযোগ তুলে সরে গেলেন জয়ী প্রার্থী
এদিকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন করাচির একটি আসনে বিজয়ী ঘোষিত প্রার্থী জামায়াত-ই-ইসলামী নেতা হাফিজ নাইম উর রেহমান। হাফিজ জানান, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁর চেয়ে অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন। কিন্তু ফলাফলে ওই প্রার্থীর ভোট কম দেখিয়ে তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের অবৈধভাবে জয়ী করতে চায়, তাহলে আমরা তা মেনে নেব না। জনগণের মতামতকে সম্মান করা উচিত।’ সূত্র : জিও নিউজ, দ্য ডন, বিবিসি