আন্তর্জাতিক

ত্রাণের জন্য অপেক্ষারতদের ওপর ইসরায়েলি হামলা, ১১ ফিলিস্তিনি নিহত

প্রবাহ ডেস্ক : মধ্য গাজায় খাদ্যবাহী ট্রাকের জন্য অপেক্ষমাণ জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এই ভূখ-ের সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা জানান, গত বুধবার ভোর থেকে ওই ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে। গত কয়েক দিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজায় খাবার বিতরণ কেন্দ্র বা খাদ্যবাহী ট্রাক আসার সম্ভাব্য রুটে জড়ো হওয়া শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, হাজার হাজার নাগরিকের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়েছে এবং একাধিক শেল নিক্ষেপ করেছে। গাজার নেতসারিম করিডোর সংলগ্ন এলাকায় খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল তারা। নেতসারিম করিডোরটি গাজার ভেতর দিয়ে চলে গেছে। এটি আংশিকভাবে ইসরায়েলি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মধ্য গাজায় তাদের সেনারা সন্দেহজনক কিছু ব্যক্তিকে কাছে আসতে দেখে। তাদের কাছে ওই ব্যক্তিদের হুমকি মনে হয়েছিল। তারা জানায়, সেনারা সতর্কতামূলক গুলি ছুঁড়েছিল। তবে কোনও হতাহতের বিষয়ে জানা নেই। দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালের মুখপাত্র খালিল আল-দাকরান বলেন, ১১ জন নিহত ও ৭২ জন আহতকে সেখানে এবং নুসেইরাতের আল-আওদা হাসপাতালে আনা হয়েছে তিনি জানান, হাসপাতালগুলো আহতদের চাপে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। আল-আওদা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান নাসের আবু সামরা বলেন, এটা প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই আমরা এসব ঘটনা মোকাবিলা করছি। গড়ে প্রতিদিন নেতসারিমে ত্রাণ বিতরণ পয়েন্ট থেকেই ৭০ থেকে ৮০ জনের বেশি আহত রোগী আমাদের কাছে আসে। গাজায় মার্চ ও এপ্রিল জুড়ে ইসরায়েল কঠোর অবরোধ আরোপ করায় চরম খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এর ফলে ২৩ লাখ মানুষের জন্য চরম দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গত মাসে অবরোধ আংশিকভাবে শিথিল করার পর জাতিসংঘ গাজায় সাহায্য পাঠানোর চেষ্টা করলেও নানা বাধার সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া রাস্তা, ইসরায়েলি সামরিক বিধিনিষেধ, চলমান বিমান হামলা এবং ক্রমবর্ধমান বিশৃঙ্খলা। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বুধবার জানিয়েছে, গত চার সপ্তাহে তারা গাজায় মাত্র ৯,০০০ মেট্রিক টন খাদ্যসামগ্রী পাঠাতে পেরেছে, যা ২১ লাখ ক্ষুধার্ত মানুষের প্রয়োজনের তুলনায় সামান্যই। তারা আরও জানিয়েছে, খাদ্য বিতরণের ব্যাপক মাত্রায় প্রসারই একমাত্র উপায় যা পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে পারে এবং মানুষের উদ্বেগ হ্রাস করতে পারে। গত মঙ্গলবার সকালে খান ইউনিসে একটি আটা বহনকারী ট্রাকের জন্য অপেক্ষমাণ জনতার ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button