খুলনায় জাপার জরুরী সভায় প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় না নামার সিদ্ধান্তে অনঢ়

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনার ৬টি আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রতীক পেলেও নির্বাচনী প্রচারণায় না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। বুধবার সকালে ডাকবাংলাস্থ পার্টি কার্যালয়ে জেলা ও মহানগর জাপা এক জরুরী সভা এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে তারা শিগগিরই কেন্দ্রে যাবেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত নেবেন ও পরে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানাবেন বলে জানান।
দলীয় সূত্র জানায়, খুলনা ৬নং আসনে (কয়রা-পাইকগাছা) জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুকে জোটের প্রার্থী না করায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বুধবার অনুষ্ঠিত সভায় অধিকাংশ নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেন। ওই মতামত কেন্দ্রে জানানো হবে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের আলোকে তারা কাজ করবেন বলে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদ জানান। তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্তই তার সিদ্ধান্ত। দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। দল নির্বাচনী প্রচারণায় না নামতে বললে তারা নামবে না। নির্বাচনে না নামার স্থানীয় সিদ্ধান্তকে তিনি আমলে নিতে নারাজ। খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, সভায় খুলনা জেলার ৯টি উপজেলা ও নগরীর পাঁচটি থানার জাপার সভাপতি ও সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এমনই পরিস্থিতে অধিকাংশ নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য মতামত পেশ করেছে। বিষয়টি তিনি কেন্দ্রকে অবগত করবেন। এছাড়া তারা আরো ২/৩ দিন নির্বাচনী এলাকার পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করবেন। তারপরও যদি নির্বাচনী পরিবেশ অনুকূলে না আসে তাহলে তারা সংবাদ সম্মেলনে করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন। এই কয়েক দিন তারা নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন না বলে জানান। জেলা জাপার সাঃ সম্পাদক এম হাদিউজ্জামান হাদির পরিচালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ৬নং আসনের জাপার প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। বক্তৃতা করেন খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদ, খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. গাউসুল আজম, খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফরহাদ আহমেদ, খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে জাতীয় পাটির প্রার্থী মো. শাহীদ আলম, জাপা নেতা আকরামুজ্জামান খান, মহানগর যুবসংহতির সদস্য সচিব রাসেল হোসেন, মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। খুলনা মহানগর যুবসংহতির সদস্য সচিব মোঃ রাসলে হোসেন বলেন, খুলনা একটি বিভাগীয় শহর। এখান থেকে একজনকে জোটের প্রার্থী করার ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে জোর দাবি ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। দীর্ঘ ১৫/২০ বছর ধরে খুলনার জাপাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে তারা কেউই প্রচারণায় না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খুলনা-৬ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও জেলা জাপার সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম মধু খুলনায় জাপার অভিভাবক হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, আ’লীগ সারা দেশে জাপাকে ২৫টি আসন ছাড় দিয়েছে। কিন্তু বিভাগীয় শহর খুলনাকে এ হিসেবে বঞ্চিত করেছে। দলের জোরালো দাবি ছিল, খুলনা জেলার একটি আসন জোটের পক্ষে জাপাকে ছাড় দেয়া হোক। কিন্তু তা দেয়া হয়নি। দীর্ঘ ৩টি সংসদীয় নির্বাচন খুলনা ৬নং আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। এবার বড় আশা ছিল জোটের প্রার্থী হিসেবে দল খুলনা ৬নং আসনে জাপাকে ছাড় দিবে। কিন্তু তা না দেয়ার জন্য খুলনার নেতা-কর্মীরা চরম হতাশ হয়েছে।