স্থানীয় সংবাদ

গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৬পদার্পন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজন

৩৬তম বছরে পদার্পন করলো গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৬ বছর পদার্পন উপলক্ষে নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। মূলতঃ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবায় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভূমিকা অপরিসীম। এখন পর্যন্ত চিকিৎসা সেবায় গাজী মেডিকেল যে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে তার জন্য গাজী মেডিকেল এর প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ গাজী মিজানুর রহমান এখনও সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসনীয়। সততা, দায়িত্ববোধ ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে মাত্র ১০ বেড দিয়ে শুরু করে বর্তমানে ৬০০ বেড-এ উত্তীর্ন এই হাসপাতালেটি। এছাড়া নানা কাজে শতাধিক এর বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগে প্রায় ৬৫০ জন মানুষের জিবীকা নির্বাহ হচ্ছে এই হাসপাতালটির থেকে । বর্তমানে গাজী মেডিকেল কলেজ ও জিএমআর নার্সিং ইন্সটিটিউটে প্রায় ৮০০ জন ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেল ও নার্সিং পড়াশুনা করছেন যার মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক ভারতীয় ও নেপালী শিক্ষার্থী রয়েছে। যা আমাদের খুলনার জন্য গর্বের বিষয়। বিদেশী শিক্ষার্থীরা এখানে আসার কারনে বাংলাদেশ বিদেশী রেমিটেন্স অর্জন করছে। পাশাপাশি জিএমআর নার্সিং ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে দেশে দক্ষ নার্স তৈরী হয়ে সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে অসুস্থ্য রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালের সকল বিভাগে মাত্র ১৫০ টাকায় খরচের মাধ্যমে মেডিকেল অফিসার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত দেখানোর সুযোগ, প্রতি বুধবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরন করা হচ্ছে এই ব্যক্তি মালিকানাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রতি বছরে কয়েকবার সার্জারী, গাইনী, অর্থোপেডিক্স, নাক-কান-গলা, চক্ষুসহ বিভিন্ন ধরনের ফ্রি অপারেশন এবং ফ্রি বেডে গরীব ও দুঃস্থ্য রোগীদের যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে তা প্রসংসার দাবী রাখে এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বৃহস্পতিবার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেএমপি’র মান্যবর পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম এসব কথা বলেন। এছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, ডা. গাজী মিজানুর রহমান চিকিৎসা ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে অবদান রাখছেন। নার্সারী থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডা. গাজী মিজানুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় সোনাডাঙ্গা খুলনা, জিএমআর নার্সিং ইন্সটিটিউট, গাজী মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে দক্ষ শিক্ষিতের হার বাড়িয়ে তুলছেন। অনুষ্ঠানে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. গাজী মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ইতিপূর্বে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবার অবস্থা বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন সেবা খুলনাতে চালু করেছি এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। “স্বাস্থ্য সেবায় সবার আগে” এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমাদের সকল কার্যক্রম। গত ৫ বৎসর প্রতি বৃধবার এখানে আউটডোরে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় এবং প্রায় ৫৫,০০০ রোগী এই সেবা গ্রহন করে। তাছাড়া ইনডোর বিভাগে ১৫% ফ্রি বেডে গরীব ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। প্রতি বছর শতাধিক অপারেশনও বিনামূল্যে করা হয়। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন দূরবর্তী স্থানে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় ১০ হাজার রোগীদের বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা হয়। আমরা খুলনাতে চিকিৎসা সেবার সকল ধরনের ব্যবস্থা করতে চাই, যেন খুলনা থেকে তথা দক্ষিণাঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে কাউকে ঢাকায় বা অন্যত্র যেতে না হয় বরং যে কোন প্রান্ত থেকে মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসবে এমন ব্যবস্থাপনা ও সুযোগ-সুবিধা আমরা করতে চাই। এ বিষয়ে তিনি সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন। ৩৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সকালে বর্ণাঢ্য র‌্যালী করা হয়, ১৫ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন ও ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং করা হয়, গরীবদের মাঝে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরন সহ দিনব্যাপি পিঠা উৎসব পালন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএমপি,র ডিসি সাউথ জোন মোঃ তাজুল ইসলাম । অনুষ্ঠানে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আশিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. বঙ্গ কমল বসু, উপধ্যক্ষ ডা. নুসরাত আহম্মেদ, ডা. মোস্তফা আল মামুন, জীবন সংগ্রামের সহ-সভাপতি জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইয়াছিন আলী গাজী। উক্ত অনুষ্ঠানে গাজী মেডিকেল কলেজেরে সকল শিক্ষক শিক্ষীকা ও শিক্ষার্র্থী, জিএমআর নাসিং ইনস্টিটিউটের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button