খুলনায় জেঁকে বসেছে শীত
খুলনার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস, নগরীর গরম কাপড়ের দোকানে ঝুঁকছেন ক্রেতারা
মো. আশিকুর রহমান ঃ পৌষের শেষে খুলনায় জেঁকে বসেছে শীত। শীতের তীব্রতায় পড়ে অনেকটাই কোনঠাসা অবস্থায় নগরবাসী। রাতে বাইরে হিম শীতল হাওয়া আর ভোরের কুয়াশা, দু’য়ে মিলে পৌষের শেষে তীব্র ঠান্ডায় কুপোকাত নগর ও নগরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা। কিছুদিন আগে তেমনটি শীতের দেখা না মিললেও, সম্প্রতি পড়া প্রচন্ড শীত অস্থির করে তুলছে নগরবাসীকে। দিনের অর্ধেক সময় পার হলেও দেখা মিলছেনা সূর্যের। খুলনা আবহাওয়া অফিস বলছে, হালকা হতে মাঝারী ধরনের কুয়াশা এবং সূর্যের কিরণের তীব্রতা কম থাকায়, পাশাপাাশি হালকা হিমেল বাতাস থাকায় শীতের অনুভূতিটা বেশি হচ্ছে। রবিবার (১৪ জানুয়ারী) খুলনার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। রবিবার (১৪ জানুয়ারী) নগরীর ডাকবাংলা, শিববাড়ী, সোনাডাঙ্গা, রূপসা, বয়রা, বৈকালি, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, আটরা, গিলাতলা, দামোদর, ফুলতলা, গাইকুড়, আড়ংঘাটা, রংপুর, শলুয়া, শাহপুর অঞ্চলের বাসিন্দারা শীতের কারণে জড়সড় হয়ে পড়ে। মোটা কাপড় পড়েও যেন শীতের হাত হতে রক্ষা মিলছেনা। অনেক স্থানেই অনেকে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবরণের চেষ্টা করে। এদিকে, সম্প্রতি সারা দেশের মতো খুলনায়ও শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে। নগরীর ডাকবাংলো, রূপসা, কেসিসি মার্কেট, নিক্সন মার্কেট, হেলাতলা মোড়, গল্লামারি, দৌলতপুর, খালিশপুর এবং নিউমার্কেটসহ প্রায় সব এলাকায় শীতবস্ত্রের বিক্রয় বেড়েছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহানগরীর ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত শপিং মলে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। খুলনার নিক্সন মার্কেটের শীত কাপড়ের দোকানগুলোতে যথেষ্ট ক্রেতাদের সমাগম লক্ষ্য করা গেছে। শুধু নি¤œবিত্ত নয় মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও ঝুঁকছেন এসব দোকানে। বিক্রেতারা জানান, শীতের কাপড়ের মধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, লং কোর্ট, মাফলার, হাত মোজা ও পা মোজা বিক্রি করছেন তারা। ক্রেতাদেরও চাহিদা রয়েছে এসবে। দাম, মান আর দোকানভেদে বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে দোকানগুলোতে। বিশেষ করে ফুটপাতের ভাসমান দোকানগুলোতে এসব কাপড় বিক্রি হচ্ছে খুব বেশি। এসব দোকানে বেশি বিক্রয় হচ্ছে ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের কাপড়। মাথার টুপি, পায়ের মোজা, হাতমোজা, মাফলার, সোয়েটার, জাম্পার, ফুলহাতা গেঞ্জি এবং কম্বলের দোকানের ভিড় দেখা গেছে। ডাকবাংলোর মোড়ের ফুটপাতে শীত বস্ত্র বিক্রেতা মামুন বলেন, আমরা স্বল্প সময়ের জন্য ফুটপাতে শীতের পোশাক বিক্রি করি। এবছর যেমন ক্রেতা সাড়া না পেলেও সম্প্রতি সময়ে বেশ শীত পড়তে শুরু করেছে, তাই খুলনায় শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপড় বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। কেসিসি মার্কেটের সামনের ফুটপাতের হকার মো. নুরু বিক্রয় করছেন কম্বল, জ্যাকেট। তিনি জানান, বেচাকেনা তেমন ছিলো না। কিন্তু হঠাৎ শীত পড়ায় বেচা-বিক্রি বেড়ে গেছে। দৌলতপুরের পোশাক ব্যবসায়ী সিরাজুল জানান, কিছুটা শীত বাড়ায় গত কয়েকদিনে বড়দের পাশাপাশি বাচ্চাদের পোশাকের বিক্রয়ও অনেকটা বেড়ে গেছে। বাচ্চাদের শীতের পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। তার দোকানে শুধু বাচ্চাদের পোশাকই বিক্রয় হচ্ছে। ক্রেতা শারমিন আক্তার নাদিরা জানান, বাচ্চার বয়স দেড় বছর। গত ২/৩দিন ধরে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়া শুরু করেছে। তাই শীতের পোশাকের দোকানে এলাম বাচ্চার ঠান্ডার পোশাক কিনতে। বাচ্চার জন্য মোজা-টুপি কিনলাম। দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। রিক্সা চালক হাফিজুল জানান, ভোরে রিক্সা নিয়ে বের হয়। বর্তমানে কয়েকদিন আগের তুলনায় বাইরে প্রচুর ঠান্ডা। হাড় কাঁপানো শীত। মোটা পোশাক পড়েও শীত নিবারণ হচ্ছে না। ঠান্ডায় রিক্সা চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, রবিবার (১৪ জানুয়ারী) খুলনার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস, হালকা হতে মাঝারী ধরনের কুয়াশা এবং সূর্যের কিরণের তীব্রতা কম থাকায়, হালকা হিমেল বাতাস থাকায় শীতের অনুভূতিটা বেশি হচ্ছে।