স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় বিশাল শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ

আটককৃত রিক্সা ব্যাটারি ও মোটর ফেরত দেয়া এবং নীতিমালা প্রণয়ন করে লাইসেন্স প্রদানের দাবি

খবর বিজ্ঞপ্তি : পুনর্বাসন ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিক্সা বন্ধে কেসিসি’র সিদ্ধান্ত বাতিল, আটককৃত সকল রিক্সা ব্যাটারি ও মটরসহ ফেরত দেয়া এবং নীতিমালা প্রণয়ন করে এসব গাড়ির লাইসেন্স প্রদানের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে আজ ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪, বেলা ১০:৩০টায় নগরীর ডাকবাংলা ফেরিঘাট মোড়ে শ্রমিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে রিক্সা, ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ এবং রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা মহানগর কমিটি। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা মহানগর কমিটির আহবায়ক এইচ এম শাহাদাৎ এবং সঞ্চালনা করেন রিক্সা-ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ খুলনা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব জনার্দন দত্ত নান্টু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম পরিষদের খুলনা মহানগর আহ্বায়ক এসএম আলমগীর হোসেন বাবু, সদস্য কোহিনুর আক্তার কণা, আব্দুল করিম, রিক্সা ইউনিয়নের সদস্য সচিব এস এম চন্দন, সদস্য এস এ রশীদ, মিজানুর রহমান বাবু, সুতপা বেদজ্ঞ, সংগ্রাম পরিষদ নেতা মানিক মিয়া, মোঃ সেলিম, ইলিয়াস আকন, আজহারুল ইসলাম, শহীদুল শিকদার মনির, হারুনুর রশিদ, মোঃ শহীদ, রিক্সা শ্রমিক নেতা আলমগীর হোসেন, মুরাদ হোসেন, ইয়াসিন, মাসুম খান প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন, কেসিসি কর্তৃক ব্যাটারিচালিত রিক্সা বন্ধ করা এবং ব্যাটারি ও মোটর খুলে নেয়া ও ভেঙে ফেলার কারণে বর্তমানে খুলনা মহানগরীতে রিকশাচালক, মেকানিকসহ এর সাথে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ তীব্র আর্থিক সংকটে আছে। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে এভাবে স্ব-কর্মসংস্থানের উপায় বন্ধ করা অন্যায়। যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য রাস্তাঘাট প্রশস্ত না করে বা বাইপাস সড়ক নির্মাণ না করে শুধু রিক্সা শ্রমিকদের উপর এই হয়রানি এক ধরনের জুলুম-নির্যাতন ছাড়া আর কিছুই নয়। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় ব্যাটারীচালিত রিক্সাকে আরো আধুনিকায়নের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দ্বারা বিজ্ঞানসম্মত ডিজাইন করা এবং এগুলোর রেজিস্ট্রেশন ও চলাচলের নীতিমালা করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছি। আমরা বারংবার বলেছি ব্যাটারী রিক্সা বন্ধ না করে বিশেষজ্ঞ দিয়ে এর উপযুক্ত যে ডিজাইন প্রণয়ন করা হোক না কেন তা আমাদের দীর্ঘদিনের কাজে অভিজ্ঞ মেকানিকরা অবশ্যই তৈরি করতে পারবে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে ‘থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০২১’ নামে একটি খসড়া নীতিমালা করেছে যা চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল হাইকোর্টের আপীল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মহাসড়ক ব্যতীত সর্বক্ষেত্রে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার বাহন চলতে দেয়ার ব্যাপারে রায় দিয়েছে। ইতিমধ্যে এই রিক্সার চালকরাও বেশ দক্ষ হয়ে উঠেছেন। এক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ নিলে সারাদেশে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের নিরাপদ কর্মসংস্থান হবে। আমরা মনে করি, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিবন্ধন, রুট পারমিট, লাইসেন্স দেয়ার ব্যবস্থা চালু হলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামসহ প্রয়োজনীয় অনেক খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আয় বাড়ানোর জন্য শ্রমজীবী মানুষ রিক্সাতে ব্যাটারি ও মোটর লাগিয়ে আধুনিকায়ন করে তাদের আয় বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। ব্যাটারিচালিত রিক্সা বন্ধ করার কারণে এর সুবিধাভোগী অসংখ্য মানুষও সমস্যায় পতিত হচ্ছেন। তাই নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া ব্যাটারী রিক্সা-ভ্যান উচ্ছেদ ও হয়রানি বন্ধ করা, আটককৃত সকল রিক্সা ব্যাটারী ও মোটরসহ ফেরত দেয়া, পুলিশ ও কেসিসি’র হয়রানি বন্ধ করা, প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারীচালিত বাহনের লাইসেন্স প্রদান করা, বিশেষজ্ঞ দ্বারা রিক্সার জন্য যথোপযুক্ত ডিজাইন ও নিরাপদ ব্রেক পদ্ধতি নিশ্চিত করা, নগরীর প্রধান সড়কে রিক্সার জন্য প্রয়োজনে আলাদা লেন নির্মান করা এবং সংগ্রাম পরিষদের সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করে প্রস্তাবিত ‘থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০২১’ চূড়ান্ত করে ব্যাটারিচালিত রিক্সার লাইসেন্স প্রদান, বর্ধিত রেকার চার্জ প্রত্যাহার এবং চালকদের উপর হয়রানি নির্যাতন বন্ধ করার দাবির জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিববাড়ি মোড়ে শেষ হয়। সমাবেশ ও মিছিলের উপর পুলিশের নিষেধাজ্ঞা ও বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানান। সমাবেশ থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দল কেএমপি কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎ করে দাবীসমূহ উত্থাপন করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button