স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় খেজুরের গুড়ে সয়লাব : আসল আর নকল নিয়ে জটিলতায় ক্রেতারা

শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ খুলনায় ভেজাল খেজুরের গুড়ে সয়লাব থাকলেও কোনটি আসল আর কোনটি নকল এ নিয়ে আছেন জটিলতায়। খুলনা নগরীর অলিগলিতে হাক-ডাক ছেড়ে সাইকেল বা ঝুড়িতে মাটির তৈরি গুড়ের ঠিলা নিয়ে বাড়ী বাড়ী যেয়ে খেজুরের গুড় বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে এসব গুড়ে খেজুরের রসের ঘ্রান থাকলেও এগুলো আসল খেজুরের গুড় না সবই ভেজাল গুড় বোঝার উপায় নেই সাধারণ ক্রেতাদের। এদিকে খুলনায় খেজুর গাছ গুলো গাছির অভাবে অধিকাংশ খেজুর গাছে কাটাতে পারিনি মহাজনেরা যে কারণে এখন খেজুরের রসের চাহিদা তুঙ্গে। এবিষয়ে সচেতন নাগরিক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, কোনটি আসল আর কোনটি নকল গুড় বোঝার কোন উপায় নেই। বিক্রেতাদের কাছ থেকে গুড় হাতে নিলে খেজুরের গুড়ের মত ঘ্রান বের হয়। খেতেও ভাল লাগে তবে ভেজাল গুড় খেলে বা ভেজাল গুড়ের তৈরি কোন খাবার বা গুড় খেলে শরিরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয় বমি বমি ভাব, বদ হজমসহ গ্যাস্ট্রোলজি সমস্যা হয় এগুলো শরিরের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর। পাশাপাশি শীতের মৌসুমে বাড়ী বাড়ী শীতের পিঠা তৈরিতে প্রয়োজন খেজুরের গুড় আর এই সুযোগে এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়িরা তৈরি করছে ভেজাল গুড়। এছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচরণা করে বিক্রি হচ্ছে খেজুরের গুড়। তবে আসল গুড়ের গ্যারান্টি দিয়ে বিক্রি করলেও দাম দামের সাথে মিলছেনা। মূলতঃ বাড়ী বাড়ী খেজুরের গুড়ের যে দাম থাকে তার থেকে অনলাইনে আরও দ্বিগুন দামে বিক্রি হয়। অভিযোগ আছে এ্ই ভেজাল গুড়গুলো ছড়িয়ে পড়ছে খুলনার পাড়া-মহল্লায়। এছাড়া প্রতি ঠিলা খেজুরের রসের দাম এখন ৩০০ টাকায় বিক্রি হলে গুড়ের দাম আরও বেশি হওয়ার কথা। এদিকে খেজুরের রসের উৎপাদনের থেকে বেশি রয়েছে রসের চাহিদা। যেকারণে গাছিদের সাথে কথা বলে আগাম টাকা দিয়ে কয়েকদিন অপেক্ষা করার পর মেলে কাঙ্খিত খেজুরের রস। এদিকে সরেজমিনে দেখা যায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে ও সাইকেলে করে মাটির ঠিলার মধ্যে খেজুরের গুড় বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমান গুড় ব্যবসায়ি মো. আমিরুল হাসান। তিনি খেজুরের গুড়ের কেজি ২৫০ টাকা দাবি করলেও ২২০ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হয়। তবে এসব মাটির পাত্রে গুড় থাকলেও এগুলো আসল খেজুরের গুড় না। এক পর্যায়ে অন্য এক ক্রেতার সাথে বাকবিতন্ডা তৈরি হয় তার সাথে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে তিনি সত্যিই কথা শিকার বলেন, আমার খেজুরের গুড় ভালো কোন ভেজাল না। তবে ব্যবসায়িরা আছে যারা নষ্ট চিনি দিয়ে তৈরি করে খেজুরের গুড়। আমাদের বাড়ী চুয়াডাঙ্গা জেলার পোড়াদাহ এলাকায়। খুলনায় এসে আমরা এই গুড় বিক্রি করছি। সারাদিন গ্রামের পাড়া মহল্লায় গুড় বিক্রি করে । এছাড়া গুড় বিক্রি শেষ হলে ফোন করলে ট্রেনে করে এই গুড় খুলনায় পাঠিয়ে দেয় মহাজনরা। আমরা বাড়ী বাড়ী যেয়ে এই গুড় বিক্রি করি। আমরা এসব উৎপাদিত গুড়ের কারখানা থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করি। এছাড়া আমরা খুব বেশি ভেজাল ভাবে গুড় তৈরি এটা সঠিকনা। খেজুরের রস জ¦ালিয়ে যখন একটু রং পরিবর্তন হয় ঠিক তখনই চিনি দেয়া হয়। এছাড়া অভিযোগ আছে মিস্টির তৈরি করার পর বাষি শিরাও ফিটকেরি, ডালডা ও চুনসহ কিছু উপাদান দেয়া হয়। দশ ঠিলা রস দিয়ে আট ঠিলা গুড় তৈরি হয়। এছাড়া এই গুড় খেয়ে কেউ বুঝবেনা যে নকল খেজুরের গুড় যতক্ষণ পর্যন্ত পরিক্ষা না করা হয়। এবিষয়ে খুলনা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের বিভাগীয় উপঃপরিচালক মো.ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি নজরদারিতে আছে। কোথায় ভেজাল গুড় তৈরি হয় আমরা দেখছি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button