গরীবের ঘরের ছাউনি গোলপাতা এখন বিলুপ্তির পথে

আধুনিকতার স্পর্শে হারিয়ে যাচ্ছে
শেখ ফেরদৌস রহমান: আগের মত চোখে দেখা যায়না চির চেনা নি¤œ ও মধ্যবিত্তদের ঘরের ছাউনি গোলপাতা আর গোলপাতার ঘর। আধুনিতার স্পর্ষে কালের বিবর্তনে যেন হারিয়ে যাচ্ছে এই বাংলার ঐতিহ্য। নগরীর খালিশপুর হার্ডবোর্ড খেয়াঘাটের পাশে একসময়ে দেখা যেত সারি,সারি ভাবে গোলপাতা বিক্রি করছে ব্যাবসায়িরা। এখনও দেখা যায় দু একজনকে।তবে সারা মাসে পাচ থেকে সাত দিন বেচা-বিক্রি হয়। আর বাকি অন্যদিন কোন বিক্রি থাকেনা।এমনকি সপ্তাহে একদিন ও বিক্রি থাকেনা।যেকারণে প্রতিদিনের পারিশ্রমিক ও উঠেনা ব্রবসায়িদের।এছাড়া একসময়ে ঘরে,ঘরে ছিল গোলপাতা দিয়ে তৈরি ঘর।বিশেষ করে ফালগুন মাস শুরু হতে গোলপাতার তৈরি ঘর গুলো হতো মেরামোত। এখন গোলপাতার ঘর গুলো যেন নতুন প্রজ¤েœর কাছে ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। এছাড়া কিছু কিছু মানুষ শখের বসত রেস্টুরেন্ট, শুটিংস্পট,পার্ক সহ বাংলোর পাশে নিচে ইটের তৈরি আধাপাকা দালান আর উপরে বাহারী ডিজাইন করা গোলপাতার ছাউনির ঘর।মুলত প্রায় আট থেকে দশ ফুট লম্বা আর দেখতে কিছুটা নারকেলের পাতার মত দেখলেও এই গোলপাতা এখন বিলুপ্ত পথে। গতকাল দেখা যায় খালিশপুরে হার্ডবোর্ড মিলের পাশে ভ্যানে করে দশ পণের মত গোলপাতা ক্রয় করে নিচ্ছে রফিক নামের একজন ক্রেতা।তিনি বলেন, আমার বাড়ীতে এখনও গোলপাতার তৈরি ঘর। প্রতি পণের দাম পড়েছে ৩শত টাকার মত।এই গোলপাতার ঘর গুলো গরমের সময়ে ঘরেরমধ্যে থাকে শিতল।এছাড়া এই গোলপাতার ঘরে আমাদের বেড়ে উঠা। এখন আমার বাড়ীর চার পাশ সকলের বাড়ীতে আছে টিনের তৈরি ঘর।আবার কারোর ঘরে পাকা দালান।এই যে সামনের দিন গুলোতে যখন গরমে হাস-ফাস অবস্থা তখন টিনের তৈরি আর পাকা দালানে বসবাসকারী মানুষের অবস্থা যেন দুর্ভোগ চরমে। আর গোলপাতার ঘরে গরমের তেমন কোন সমস্যা হয়না।অনেক পাকা দালান ওলা আর টিনের ঘরের বসবাসকারী মানুষেরা আমার তৈরি গোলপাতার ঘরে বিশ্রাম নিতে আসে।তবে আমি মনে করি এই গোলপাতার ঘর গুলো আদিম মানুষের থেকে প্রচরন । প্রতিটি বাড়ীতে একটি করে ছোট গোলপাতার ঘর থাকা উচিত। এতে করে শরির মনমানুষিকতা ভাল থাকে। এ বিষয়ে কথা গোলপাতা বিক্রেতা মোঃ ফেরদৌ এর সাথে তিনি বলেন, একসময়ে এখানে দশ জনের মত গোলপাতা ব্যবসায়ি ছিল। এখন আছি আমরা তিনজন এর মধ্যে একজ নাম মাত্র ব্যাবসা।এসব গোলপাতা সুন্দরবন থেকে ট্রলারে নিয়ে আসা হয়।তবে, দুঃখের বিষয় হলো বর্তমান বেচা বিক্রি হচ্ছেনা।মাসের মধ্যে যদি পাচ সাত দিন বিক্রি হয়। আর দীর্ঘদিন ফেলে রাখলে গোল পাতা গুলো নষ্ট হয়। প্রতি পণ ৪০ টি মএখন ৩২০ টাকা বা এর থেকে কম বিক্রি হয়।এখন গরীবের ঘরে দেখা যায় টিনের ছাউনি।যে কারণে গোলপাতার আর কদর নেই।