স্থানীয় সংবাদ

খুলনার মোড়ে মোড়ে ইফতার : উৎসবের আমেজ!

নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ইফতার পূর্ব মুহুর্তে বাহরি স্বাদের ইফতার বিক্রির ধুম

মোঃ আশিকুর রহমান ঃ পবিত্র মাহে রমজানকে ঘিরে খুলনায় মোড়ে মোড়ে চলছে ইফতারের আয়োজন। ইফতার আয়োজনের কমতি নেই খুলনার প্রসিদ্ধ হোটেল-রে¯েঁÍারাগুলোতেও, পাশাপাশি স্থানীয় মফস্বল এলাকা গুলোতেও মৌসুমি ইফতারী ব্যবসায়ীদের হাকডাক শুরু হয়েছে ইফতারী বিক্রিতে। বিভিন্ন রকমারি স্বাদের আয়োজনে সাজানো হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ইফতারী। মঙ্গলবার ( ১২ মার্চ) মাহে রমজানের পহেলা দিনে নগরীর ডাকবাংলা, শিববাড়ী, ফেরীঘাট, নিউমার্কেট, ময়লাপোতা, সাতরাস্তার মোড়, গল্লামারী, নিরালা, জিরোপয়েন্ট, রুপসা, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি এলাকাসহ স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরা ও মৌসুমি ইফতার বিক্রির দোকানে ছোলা, মুড়ি, পেয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, ডিমের চপ, চিকেন চপ, শাহী জিলাপী, রেশমী জিলাপী, শাহী হালিম, ফ্রটুস্ জুট, ফিরনি, লাচ্ছি, ফালুদাসহ হরেক স্বাদের ইফতারী বিক্রি করতে দেখা গেছে। হোটেল-রে¯েঁÍারা ও মৌসুমি ইফতার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছোলা প্রতিকেজি ১৬০ টাকা, পিয়াজু প্রতি পিস ৮/১০টাকা, বেগুনি ৮/১০টাকা প্রতি পিস, আলুর চপ ৮/১০টাকা, ডিমের চপ বড় প্রতি পিস ২০টাকা, মাঝারী প্রতি পিস ১০টাকা, চিকেন চপ প্রতি পিস,২০/৩০টাকা, চিংড়ি চপ প্রতি পিস ৩০টাকা, বুন্দিয়া প্রতিকেজি ২০০টাকা শাহী জিলাপী প্রতিকেজি ১৯০/২০০টাকা, রেশমী জিলাপী প্রতি কেজি ৩০০টাকা, শাহী হালিম প্রতি কেজি ৩০০টাকা, হাফ কেজি ১৬০টাকা, ফিরনি প্রতি বাটি ৫০টাকা, লাচ্ছি প্রতি গ্লাস ১০০টাকা, ফালুদা প্রতি গ্লাস দরে ১০০/১২০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর দৌলতপুরস্থ ৪৭ বছর পেরিয়ে ঐতিহ্যবাহী হোটেল শামিম এন্ড রেস্টুরেন্ট মাহে রমজান উপলক্ষে আয়োজন করেছে ইফতার বাজারের, ব্যবস্থা রয়েছে ইফতার পার্টিরও। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ওই ইফতার বাজারে পহেলা রমজানের ইফতার কিনতে আসা ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে। জানা গেছে, পিয়াজু প্রতি পিস ৮টাকা, বেগুনী ৮টাকা, আলুর চপ প্রতি পিস ৮টাকা, শাহী জিলাপী প্রতিকেজি ২০০টাকা, রেশমী জিলাপী প্রতি কেজি ৩০০টাকা, ফিরনী ৩০টাকা, লাচ্ছি ৮০টাকা, ফালুদা ১০০টাকা, খাসীর কাবাব ১০০টাকা, বার-বি-কিউ ১৩০টাকা, ভেজিটেবল রোল ২৫টাকা, বার্গার ৮০টাকা, পাটিসাপটা ৩০টাকা, হালিম এক কেজি ২৯০টাকা, চিড়িং টপ ২০টাকা, বুন্দিয়া প্রতি কেজি ২০০টাকা, নান রুটি প্রতি পিস ২৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজানে মৌসুমি ইফতারী ব্যবসায়ীদের ফুটপাতে বসতে না দেওয়ায় কিছুটা বেশি দামে হোটেল-রেস্টুরেন্ট থেকে ইফতারি কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পথচারী রহিম। তিনি বলেন, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে রকমারী স্বাদের ইফতার বিক্রি করছে। তবে দাম একটু বেশি। ফুটপাতে মৌসুমি দোকান বসতে না দেওয়ার কারণে স্থায়ী হোটেল রেস্তোরায় কর্মব্যস্ত ঘরমুখি মানুষ ইফতার কিনতে ভীড় করছে। ইফতার ক্রেতা শামিম জানান, বাড়ীতে আমার স্ত্রী, বাবা-মা, ভাই-বোন এবং আমি রোজা রাখি। রোজার মাসে সবাই সবার জায়াগা হতে ইবাদত বন্দেগী করুক, এটা আমি চাই। তাই পরিবারে ইফতারির বাড়তি কষ্ট হোক চাই না , বিধায় অফিস হতে ফেরার পথে হোটেল হতে প্রয়োজন অনুসারে পরিবারের জন্য ইফতার কিনে নিয়ে যায়। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইফতারী দাম বেশি। আর দাম কেনই বেশি হবে না, বাজারে প্রতিটি জিনিসের দামই বেশি। ব্যবসায়ী মোঃ আশিকুর রহমান শুভ জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমার হোটেল শামিম এন্ড রেস্টুরেন্টে ইফতার বাজার ও পার্টির ব্যবস্থা করেছি। মান সম্মত ইফতার সামগ্রী তৈরী করা হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে পিয়াজু , বেগুনী, আলুর চপ, শাহী জিলাপী, রেশমী জিলাপী, ফ্রুট সালাত, ফিরনী, কাশমিরী টিকিয়া, লাচ্ছি , ফালুদা, খাসীর কাবাব, বার-বি-কিউ, ভেজিটেবল রোল, হালিম, বুন্দিয়াসহ ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের ইফতারি বিক্রয় করা হচ্ছে। বাজারে প্রায় প্রতিটি জিনিসের দামই বেশি, তারপরও সামান্য লাভে ইফতার তৈরী করে বিক্রি করা হচ্ছে। ইফতারির সামগ্রীর পাশাপাশি ফলের দোকানেও ছিল নজরকাড়া ভীড়। হোটেল-রেস্তোরার ইফতারীর পাশাপাশি ক্রেতাদের আপেল, আঙুর, কমলা, মালটা, খেজুর, পেয়ারা, কলা, তরমুজসহ প্রভৃতি ফল কিনতে দেখা গেছে। ফল বিক্রেতা এনামুল জানান, খেজুর দিয়ে ইফতারী করা সুন্নাত। তাই খেজুর যেন সবাই বাধ্যতামূলক কিনছে। খেজুরের পাশাপাশি অনেকেই দেশি-বিদেশী ফল ও কিনছে। ক্রেতা সাড়া ভালো। ফলের পাশাপাশি মিষ্টান্ন দোকানগুলোতে ভালো বেচাকেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা। মুসলিম উম্মেহার আত্মশুদ্ধির মাস মাহে রমজান, যা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মুসলিমের উপর রহমতের মাস। তিন দশক নিয়ে রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের প্রাপ্তির মাস রমজান। নগরবাসী প্রাপ্তি যেন আল্লাহপাক সুস্থভাবে সকলকে রোজা রাখার তৌফিকদান করেন, সেই সাথে সঠিক ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নেন। আর মার্জনা করেন সকল গুনাহ্রে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button