তালায় ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার

তালা প্রতিনিধি ঃ তালার ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুভাষ দাশ (৫৯) গ্রেফতার হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে ফতেপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তালা থানা পুলিশ তাকে আটক করেন। এরআগে ভুক্তভোগী শিশুর পিতা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে, পুলিশ তদন্ত শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬৭ নং ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুভাষ কুমার দাশ গত ৭ মার্চ বেলা ১২টার দিকে ৪র্থ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নিয়ে তাঁর হাত-পা টিপেয়ে নেন। একপর্যায়ে কক্ষে আর কেউ না থাকার সুযোগে তিনি ওই ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপিড়ন করেন। ঘটনার পর শিশুটি ভীতসন্ত্রস্থ ভাবে বাড়িতে এসে অস্বাভাবিক আচরত করতে থাকে। এঘটনায় সন্দেহের একপর্যায়ে শিশুটির মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনাটি ফাঁস হয়। এবিষয়ে প্রতিকার পেতে শিশুর পিতা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দেন। কিন্তু তিনি কোনও পদক্ষেপ না নেয়ায় পরবর্তীতে শিশুটির পিতা তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও তালা থানাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে তালা থানার ওসি (তদন্ত) এম. এম. সেলিম জানান, শিশুটিকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগ পাবার পর ঘটনার তদন্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর সংশোধিত ২০০৩ এর ১০ ধারায় মামলা (১০/২০২৪) রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া, এসআই মনির’র নেতৃত্বে শুক্রবার গভীর রাতে ফতেপুর গ্রামের বাড়ি থেকে শিক্ষক সুভাষ দাশকে গ্রেফতার করা হয়। আটক শিক্ষককে শনিবার সকালে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এদিকে, শিক্ষক সুভাষ কুমার দাশ ইতোপূর্বেও এই শিশু ছাত্রীকে সহ অন্যান্য শিশু ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে সুযোগ বুঝে যৌন নিপিড়ন করেছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
এব্যপারে আটক শিক্ষকের ২ জন সন্তান এই ঘটনাকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র দাবী করে বলেন, তার পিতা ওই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ব্যপক অবদান রেখেছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে কতিপয় শিক্ষক এবং এলাকার কুচক্রীমহলের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের এবং বিদ্যালয়ের নানান দূর্ণীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষরা পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ সৃষ্টি করে শিক্ষক সুভাষ দাশকে ফাঁসিয়েছে। ঘটনার দিন শিক্ষক ও ছাত্রী কেহই বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলনা দাবী করে ওই শিক্ষকের স্কুল শিক্ষিকা কন্যা জানান, চাকরীর শেষ পর্যায়ে এসে তার পিতা যেন পেনশন সহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ নিতে না পারেন সেজন্য এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম কুমার দাশ জানান, ঘটনার দিন সহকারী শিক্ষক সুভাষ দাশ সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং শিশু শিক্ষার্থী ১২টা থেকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল। এই ঘটনাটি মিমাংসা করে দেবার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবী জানান।