স্থানীয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিটস্ট্রোকে ৩জনের মৃত্যু!

খুলনা বিভাগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি, খুলনায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস # চুয়াডাঙ্গায় ১ কৃষকের মৃত্যু ৭টা ঘন্টা পর আর এক নারীর মৃত্যু, পাবনায় মৃত ১

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা বিভাগে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোর জেলায়। এই জেলায় তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া একই সময়ে খুলনায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ বছরে সর্বোচ্চ তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিকে চুয়াডাঙ্গা ২জন ও পাবনায় ১জন মোট তিন জনের মৃতু্যৃ হয়েছে হিটস্ট্রোকে । খুলনার আবহাওয়াবিদ মো: আমিরুল আজাদ বলেন, গতকাল শনিবার দুপুর তিনটার পর খুৃলনা বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোর জেলায়। এই জেলায় তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই জেলায় চলতি বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তিনি বলেন, শনিবার চুয়াডাঙ্গা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মোংলায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুমারখালীতে ( কুষ্টিয়া) ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ইশ^রদীতে (পাবনা) ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সাতক্ষীরায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এদিকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে ৩ জনের মৃতু্যৃ হয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও পাবনা শহরের রূপকথা রোডে হিট স্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জাকির হোসেন ও নিহত মর্জিনা খাতুন (৬০) দামুড়হুদা উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদ পাড়ার আজিম উদ্দীনের স্ত্রী। জাকির হোসেন মারা যান সকাল ৮টার দিকে আর বিকেল ৩টায় মারা যান মর্জিনা। ছাড়াও হিটস্ট্রোকে মারা যান পাবনা শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা সুকুমার দাস। জানা গেছে, শনিবার সকাল ৭ টার দিকে মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন চুয়াডাঙ্গার জাকির হোসেন। পরে তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। নিহত জাকির দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন। নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, ‘রোদ গরমে মাঠের ধান মরার অবস্থা। ধানের জমিতে সেচ (পানি) দেয়ার জন্য জাকির সকাল ৭ টার দিকে মাঠে যায়। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই সে মাঠে স্ট্রোক করেছে। মাঠে থাকা অন্য কৃষকরা তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’ নিহত মর্জিনা খাতুনের ছেলে কামরুল ইসলাম কামু জানান, বেলা ৩টার দিকে অতিরিক্ত তাপে আমার মা (মর্জিনা খাতুন) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় আমরা মাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার জন্য অটোভ্যানে উঠানোর সাথে সাথে আমার মা মারা যান। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৯ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৮ শতাংশ এবং বেলা ১২ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। বিকেল ৩ টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রির ঘরে দাঁড়ায়। অপরদিকে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিটস্ট্রোক করেন সুকুমার দাস (৬০)। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরমও) ডা. জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনিবার পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা ওই জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button