খুলনা সিটিতে ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে মিছিল
খবর বিজ্ঞপ্তি ঃ খুলনা সিটি করপোরেশন কর্তৃক ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ করার ঘোষণা অবিলম্বে বাতিল করার দাবিতে গতকাল বিকাল ৫টায় খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রিকশা, ব্যাটারী রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ খালিশপুর থানা কমিটি। সংগঠনের খালিশপুর থানা কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিআইডিসি রোড প্রদক্ষিণ শেষে প্লাটিনাম জুট মিল গেটে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির আহ্বায়ক ইউনুস খান মাসুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রিপন শেখের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের খুলনা মহানগর কমিটির কোষাধ্যক্ষ কোহিনুর আক্তার কণা, সদস্য আব্দুল করিম, খালিশপুর থানা কমিটির সদস্য ফিরোজ মোল্লা, বাবুল মোল্লা, গাউস খান, মুকুল তালুকদার, নূর ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন সম্প্রতি ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ করার যে ঘোষণা দিয়েছে তা সম্পূর্ণ বে-আইনি ও অমানবিক। সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল এক রায়ে সারাদেশে ২২টি মহাসড়ক ব্যতীত সকল রাস্তায় ব্যাটারী চালিত তিন চাকার যান চলাচলের রায় দিয়েছেন। এর পূর্বে ২০২১ সালে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় ব্যাটারী চালিত তিন চাকার যানের জন্য একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করে। বর্তমান বাস্তবতায় পায়ে চালিত রিকশা থেকে আয় করে সংসার চালানো অসম্ভব ও অমানিবিক। খুলনা নগরীতে বিকল্প কর্মসংস্থানও অপ্রতুল। ফলে নগরীতে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক, মেকানিক, গ্যারেজ মালিক এবং তাদের পরিবারগুলো এই বাহন থেকে আয়ের উপর নির্ভরশীল। জনগণও সহজ ও সময়সাশ্রয়ী বিধায় এই বাহন ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। এমতাবস্থায় এই বাহন বন্ধ করলে হাজার হাজার শ্রমিকের পরিবারই পথে বসবে না, নগরীর সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে রিকশা ও ইজিবাইক শ্রমিকরা অবর্ণনীয় নির্যাতন এবং অধিকারহীন জীবন-যাপন করতে বাধ্য হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশ কর্তৃক জোরপূর্বক গাড়ি আটক, ব্যাটারী-মোটর ছিনতাই ও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। সেসব ব্যাটারী-মোটর বিক্রি করে তারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। অথচ গরীব শ্রমিকরা জমি বন্ধক রেখে বা ঋণ করে এসব গাড়ি নির্মাণ করেছে। নীতিমালা করে এসব গাড়ির লাইসেন্স দেয়ার দাবি বারবার জানালেও তৎকালীন সরকার কর্ণপাত করেনি। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নীতিমালার অধীনে বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারী রিক্সার বিজ্ঞানসম্মত ডিজাইন নির্ধারণ, এই বাহনের নিবন্ধন এবং চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান অনিয়মসমূহ দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে সিটি করপোরেশন কর্তৃক ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ করার ঘোষণা বাতিল না করলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেয়া হয়।