স্থানীয় সংবাদ

প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার’ প্রভাবে খুলনায় বৃষ্টিপাত অব্যহত

# খুলনায় ২৪ ঘন্টায় ৫১ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে #
# সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখে যেতে বলা হয়েছে # এই অবস্থা আরো ১/২ দিন থাকতে পারে, দুর্ভোগ #

মো. আশিকুর রহমান ঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে খুলনা ও তার উপকূলীয় অঞ্চল সমূহে ঝড়োয়া বাতাসসহ বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কারণে খুলনার নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমেছে, বৃহস্পতিবার ( ২৪ অক্টোবর ) নগরীর বেশ কিছু এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিরতিহীন বৃষ্টিপাতের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ। দূর্ভোগে পড়ে নগরীতে ছুটে চলা কর্মব্যস্ত নগরবাসী। নগরবাসীর অভিযোগ, একটু ভারী বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় নগরীর নি¤œাঞ্চল, শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতেও সৃষ্টি হয় জলজট। খুলনার জলবদ্ধতা নিরসনের জন্য একের পর এক প্রকল্প হাতে নেওয়ার পাশাপাশি, শতকোটি টাকা ব্যয় করেও নগরবাসীর মুক্তি মিলছে না জলবদ্ধতার হাত হতে। এ ব্যর্থতার দায় কার?এমনই প্রশ্ন নগরবাসীর। খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে খুলনা ও তার উপকূলীয় অঞ্চল সমূহে ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখে যেতে বলা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থা আরো ১/২ দিন থাকতে পারে।
খুলনার স্থানীয়দের অভিযোগ, অল্প বৃষ্টিতেই নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। যেসব সড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে, সেসব সড়কে চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে ছুটে চলা সাধারণ মানুষদের। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পলিথিনসহ নানা রকম ময়লা, আবর্জনায় কারণে নালা-নর্দমার মুখগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কেসিসির পরিকল্পিত উপায়ে ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে এই জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি খুলনার স্থায়ীভাবে জলবদ্ধতা দূর করতে কেসিসিকে একটি সঠিক ও পরিকল্পিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
বাস্তহারা কলোনির বাসিন্দা সাগর জানান, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে খুলনায় বৃষ্টিপাত ও ঝড়োয়া বাতাস অব্যাহত রয়েছে । একটু ভারী বৃষ্টি হলেই আমাদের বাস্তহারা কলোনিতে নিচু জায়গাগুলোতে জলবদ্ধতা দেখা দেয়, সড়ক দিয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সিএনজি চালক রহমান জানান, ঝড়ের কারণে খুলনায় গতকাল সকাল হতে দিন জুড়ে বৃষ্টিপাত লেগেই আছে। সারাদিন জুড়ে বৃষ্টিপাতের কারণে অধিকাংশ ড্রাইভার গাড়ি বের করেনি। যে কারণে সড়কে যানবাহন কম ছিল। যাত্রীও কম ছিল। অন্যদিনের তুলনায় সড়কে যাত্রী কম ছিল। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে গাড়ি ভাড়া তেল খরচ দিয়ে হাতের টাকাই ছিল না। তাছাড়া বাজারে নিত্য পণ্যের যে অবস্থা, প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি। বিশেষ করে তরকারির গায়ে যেন আগুন লেগেছে। আবারও বৃষ্টি, তরি-তরকারির দাম আরো বাড়বে মনে হচ্ছে। মাছ চাষী সোহেল রানা জানান, কপালটাই খারাপ, কয়েকদিন আগে ঘেরে মাছ ছাড়লাম। মাছ ছাড়তে না ছাড়তেই ভারী বৃষ্টির কবলে পড়েছি। একবার ঘের ভেসে গেছে। চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আবারও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘেড়র যে মাছ আছে, তা বোধ হয় এবার আর থাকবে না সব বেরিয়ে যাবে। দৌলতপুর ঋষিপাড়া সেলুন কর্মচারী বিজয় জানান, প্রতিদিন সেলুনে কম-বেশি কাস্টমার থাকে। গতকাল বৃষ্টির কারণে সারাদিনই বসে ছিলাম। তেমন কাস্টমার ছিল না। বৃষ্টির কারণে তেমন কেউ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়নি। সারাদিন ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে সময় কাটিয়েছি। রিক্সা চালক শাহীন জানান , গতকাল সকাল হতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে থামার নাম নেই। সারাদিন থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। বাইরে তেমন লোকজন নেই। ভাড়া নেই বললেই চলে। সারাদিন রিক্সা চালিয়ে ৩০০ টাকা পেয়েছে। এতে গাড়ি ভাড়া দেবো কি? আর বাজার করবো কি দিয়ে। স্কুল শিক্ষার্থী আরিক জানান, বৃষ্টির কারণে ব্যাচে পড়তে যাতে। আম্মু বলেছে নাকি ঝড় আসছে, তাই বাড়ীতে বসেই পড়াশুনা করছি। খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে খুলনা ও তার উপকূলীয় অঞ্চল সমূহে ঝড়োয়া বাতাসসহ বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখে যেতে বলা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থা আরো ১/২ দিন থাকতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button