স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় আন্তঃজেলা নারী পাচারকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার : ভিক্টিম কিশোরী উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনায় আন্তঃজেলা নারী পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রবিবার গভীর রাতে নগরীর ৫ নম্বর মাছ ঘাট এলাকার সি ব্লক থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধার করে।
গ্রেফতার দুই পাচারকারী হচ্ছে, নগরীর ৫ নম্বর মাছঘাট এলাকার জনৈক শেখ জামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫) এবং সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালের পাশর্^বর্তী মাহতাব উদ্দিন সড়কের আদর্শ কলোনি এলাকার জনৈক পনু হাওলাদারের মেয়ে লাকি আক্তার ইতি (২৩)।
খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুনীর উল গিয়াস বলেন, শহর এবং গ্রামের সহজ-সরল মেয়েদের বিভিন্ন কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তারা ফাঁদে ফেলে। এরপর ঐ সকল সহজ-সরল মেয়েদের পাচার করে দেয়। এই রকম একটি ঘটনা খুলনার একটি কিশোরীর সঙ্গে হতে যাচ্ছিল।
তিনি বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর নগরীর ৫ নম্বর মাছ ঘাট এলাকার সি ব্লকের এক কিশোরীকে ভারতে বিউটি পার্লারে চাকরির প্রলোভন দেখায় সাইফুল। তাতে রাজি হয়ে যায় ঐ কিশোরী। কাউকে কিছু না জানিয়ে সে ঐদিন ভোর রাতে বাড়ির সবার অজান্তে সাইফুলের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। পরে তাকে সাইফুল পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য লাকি আক্তার ইতির কাছে পৌছে দেয়। ঐদিন লাকি তাকে নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার একটি বাড়িতে রেখে দেয়। তখনো সে বুঝতে পারেনি যে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। পরে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সে কৌশলে তার বাবার মোবাইল ফোনে কল দেয়। তখন কিশোরীর বাবা স্থানীয় ব্যক্তিদের বিষয়টি জানায়। স্থানীয়রা সাইফুলকে তার মেয়েকে ফেরত দেওয়ার জন্য তাগিদ দিতে থাকে। এরপর থেকে গ্যাং সদস্য সাইফুল কিশোরীর বাবাকে হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দেয়। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ সাইফুলকে আটকের চেষ্টা করতে থাকে। এর আগে স্থানীয়দের চাপে পড়ে ১৯ ডিসেম্বর সাইফুল কিশোরীকে সাতক্ষীরা শ্যামনগর থেকে ফিরিয়ে এনে পুলিশ হেফাজতে দেয়। এরপর থেকে পাচারকারী চক্রের ঐ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করতে পুলিশ বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পাতে। এরপর গত রবিবার রাতে পুলিশ সাইফুলকে নগরীর ৫ নম্বর মাছঘাট সি ব্লক থেকে এবং অপর সদস্য লাকি আক্তার ইতিকে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার মাহাতব উদ্দিন সড়কের আদর্শ কলোনি থেকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও বলেন, সাইফুল গ্রাম এবং শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কিশোরী ও নারীদের সংগ্রহ করে লাকি আক্তার ইতির কাছে দিত। খুলনা থেকে তাদের সাতক্ষীরা পর্যন্ত পৌছে দেওয়া ছিল ইতির কাজ। আর এ কাজের জন্য তারা প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে পেত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া কিশোরীর মা বাদী হয়ে খুলনা থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আসামি সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button