স্থানীয় সংবাদ

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে অভ্যন্তরে বন্দিদের ক্যান্টিনের সিগারেট গ্যাস লাইট ও পাথর কয়েদী আসামী কর্তৃক বিক্রির অভিযোগ

# প্রতিমাসে ক্যান্টিনে বন্দিদের পিসি কার্ডে বেচাকেনা হয় ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকার মালামাল #

মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে অবাধে চড়া মূল্যে সিগারেট, গ্যাস লাইট ও গ্যাস লাইটের পাথর ও মুরগীর রান্না করা মাংসসহ বিভিন্ন খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। কারারক্ষী ও কয়েদী আসামী সমন্বয় মোটা অংকের অর্থ উপার্জনের আশায় এই কারবার হচ্ছে। বিষয়টি বন্দি কয়েদী ও হাজতী আসামীদের মধ্যে ওপেন সিক্রেট হলেও কারা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ওয়াকেবহাল নয়। কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্রে ও সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া কয়েদী হাজতী আসামী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কারাগারের অভ্যন্তরে বন্দিদের শুকনো খাবারের জন্য একটি ক্যান্টিন রয়েছে। যে ক্যান্টিনে শুধুমাত্র বন্দি কয়েদী ও হাজতীরা পিসি কার্ডের মাধ্যমে কেনাবেচা করে থাকে। কারাগারের অভ্যন্তরে এই ক্যান্টিন হওয়ায় এখানে প্রতিমাসে যে পরিমানের মালামাল বন্দিদের মধ্যে বেচাকেনা হয় তার হিসাব ক্যান্টিনের ম্যানেজার,সহকারী ম্যানেজার এবং জেলার ছাড়া আর কেউ জানতে পারেন না। তবে বন্দিদের জন্য স্থাপিত এই ক্যান্টিনে প্রতিমাসে পিসি কার্ডের মাধ্যমে ১৪ থেকে ১৫ লাখের অধিক বেচাকেনা হয়। পিসি কার্ড হচ্ছে একজন বন্দির পার্সোনাল কার্ড। যে কার্ডে বন্দির নাম ও তার টাকা বন্দির আত্মীয়স্বজন বাইরে কারাগারের কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট রক্ষীদের মাধ্যমে জমা দিবে। পিসি কার্ডে বন্দির জমা টাকার তালিকা তোলার পর বন্দিরা তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ক্যান্টিন থেকে কেনাকাটা করবে। যে মালামাল কিনবে তার জমা টাকা থেকে মালামালের খরচের টাকা বাদ দেয়া হয়। সূত্রগুলো বলেছেন,প্রতি ৩ মাস পরপর কারাগারের অভ্যন্তরের বন্দিদের ক্যান্টিনে ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজার পরিবর্তন করে নতুন রক্ষিদের দায়িত্ব দেয়া হয়। সূত্রগুলো বলেছে,বর্তমানে ক্যান্টিনে ম্যানেজার হিসেবে কারারক্ষি আলাউদ্দীন ও সহকারী ম্যানেজার কারারক্ষি তন্ময় দায়িত্ব পালন করছেন। কারাগারের বন্দিদের এই ক্যান্টিন ব্যবসাকে পুঁজি করে কারাগারের কর্তৃপক্ষ মাসে লক্ষলক্ষ টাকা পকেটস্থ করছেন। কারাগারের ক্যান্টিন থেকে প্রতিমাসের মালামাল বেচাকেনার ৪ ভাগের এক ভাগ কারা মহা পরিদর্শকের সরকারী একাউন্টে জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন, কারাগার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সূত্রগুলো বলেছেন, যশোর কারাগারের কয়েদী আসামী নাহিদ তাঁতী চালিতে থেকে মাসে হাজার হাজার টাকা অবাধে উপার্জন করছেন। তিনি কারাগারের ক্যান্টিন থেকে সিগারেট একটি দামে কিনে সে বন্দি কয়েদী ও হাজতী আসামীদের কাছে অবাধে বিক্রি করছে। বেচাকেনার অর্থ বাইরে তার দেয়া আত্মীয়স্বজনের পার্সোনাল বিকাশ নাম্বারে লেনদেন করা হচ্ছে। কয়েদী আসামী নাহিদ তাঁতী চালিতে দীর্ঘ ৫ বছরের অধিক সময় থেকে যিনি ক্যান্টিন ম্যানেজারের দায়িত্ব পান তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট বাইরে থেকে একটু চড়া মূল্যে কিনে নিজে একটি দাম ফেলে বিভিন্ন বন্দিদের মধ্যে বেচাকেনা করেন। বেচাকেনার সময় তার বাইরে পার্সোনাল বিকাশ নাম্বার দিয়ে তাতে টাকা পাচ্ছে। শুধু সিগারেট নয় ক্যান্টিন থেকে গ্যাস লাইট,পাথর ও নিজে তৈরি করা মাথার টুপি পর্যন্ত সে বন্দিদের কাছে বিক্রি করছেন। তাছাড়া,তিনি ক্যান্টিন থেকে মুরগীর রান্না করা তরকারী কিনে নিজে বিভিন্ন বন্দিদের মধ্যে চড়া মূল্যে বিক্রি করছেন। তিনি তার তাঁত চালির বন্দি ছাড়াও অন্যান্য চালির বন্দিদের মাঝে বিভিন্ন পাত্রের মাধ্যমে বিক্রি করে বলে সূত্রগুলো দাবি করেছেন। একজন বন্দি দীর্ঘদিন যাবত বন্দিদের মধ্যে সিগারেট,গ্যাস লাইট ও গ্যাস লাইটের পাথর ও রান্নাকরা মুরগীর তরকারি ক্যান্টিন ও বিভিন্ন সংগ্রহ করে বিক্রির ব্যাপারে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলা শরিফুল ইসলামের কাছে এই প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি বলেন,এভাবে বিক্রি করার সুযোগ নেই। ক্যান্টিনে যে মালামাল বন্দিদের জন্য বেচাকেনা হয় সেই অর্থ কারা মহা পরিদর্শকের সরকারী একাউন্টে জমা হয়। কারা মহা পরির্দশকের নির্দেশক্রমে চালুকৃত ক্যান্টিনের টাকা অন্য কেউ নেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারি অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা করা হয় বলে তিনি জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button