স্থানীয় সংবাদ

জুলাইয়ের বিপ্লবের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে পুলিশকে জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় কাজ করতে হবে

# ৫৭তম টিআরসি ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি মোঃ আকরাম হোসেন বলেছেন #

খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি ঃ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স অতিরিক্ত আইজি(ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোঃ আকরাম হোসেন বলেছেন“ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ সহনশীলতা প্রদর্শন করে মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিকুল পরিবেশ মোকাবেলা করে অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে পালন করতে হবে। এই বাহিনীর সদস্যরা এখন আধুনিক প্রশিক্ষায় প্রশিক্ষিত চৌকস, দক্ষ ও জ্ঞান সমৃদ্ধ আন্তজার্তিক বাহিনী হিসাবে স্বীকৃত। বাহিনীর প্রতিটি সদস্যদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ও পেশাগত কর্তব্যে রাষ্ট্রিয় সম্পদ ও জনগনের নিরাপত্তায় সুর্য সৈনিকের ভুমিকা পালন করতে হবে। প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অর্জিত দক্ষতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে জনগনের সেবক হিসাবে দেশ সেবায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তিঁনি বলেন পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্য নব উদ্দীপনায় জাগ্রত হয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে সচেষ্ট থাকবে, সাধারণ জনগণ বিপদে পুলিশের সহায়তা পাবে, দুর্বল ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এই জনপ্রত্যাশা পূরণে আমাদের এই নতুন সদস্যরা আন্তরিকতার সাথে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে মর্মে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চ কালরাত্রিতে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই প্রথম প্রতিরোধযুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সুচনা করেছিল এবং বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে সারা দেশে এ যুদ্ধের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। ইতিহাসের সাক্ষী সেই পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে আমরা গর্বিত। ৩৬ জুলাইয়ের এই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে বাস্তবতার আলোকে সুখী ও সমৃদ্ধশীল দেশ গঠনের প্রত্যয়ে নবীন পুলিশ সদস্যদেরকে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার কলাকৌশল ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশিত সংস্কারে অংশীদার হতে আমরা দৃঢ়ভাবে বদ্ধ পরিকর। তিনি গতকাল ১২ জানুয়ারি রবিবার সকালে খুলনার মীরেরডাঙ্গা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের ৫৭তম ট্রেইনি রিক্রট কনস্টেবল(টিআরসি) ব্যাচের বর্ণাঢ্য ও মনোজ্ঞ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পরিদর্শন শেষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরো বলেন ৪৭-থেকে ৭১-হয়ে আজকের ৩৬-জুলাইয়ের মাধ্যমে গড়ে ওঠা বিপ্লবের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে তোমরা জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে। দেশের সীমানা পেরিয়ে আজ বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যগণ অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ণ ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাংলাদেশ পুলিশের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।’’ এসময় মঞ্চে তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট ডিআইজি আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী পিপিএম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি টিআরসিদের ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষনে সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী মোঃ ওয়াহিদ হাসান, একাডেমিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠ অর্জনকারী মোঃ ইমরুল কায়েস, মাঠ বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী মোঃ হৃদয় ইসলাম এবং মাসকেট্রিতে শ্রেষ্ঠ টিআরসি সোহানুর রহমানের হাতে পদক তুলে দেন প্রধান অতিথি। সমাপনী কুচকাওয়াজে ৭টি কোম্পানীর মোট ৬০৮ জন টিআরসি শিক্ষানবিশ পুলিশ সদস্য মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে কুচকাওয়াজে অংশগ্রহন করেন। সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ ইনেন্সপেক্টর রমেশ চন্দ্র বিশ^াস। সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী সাজ্জাদ হোসেন, পিএসসি, কমান্ড্যান্ট, জাহানাবাদ সেনানিবাস, খুলনা, মো: রেজাউল হক পিপিএম, রেঞ্জ ডিআইজি, খুলনা, মো: জুলফিকার আলী হায়দার, পুলিশ কমিশনার, কেএমপি, খুলনা। এছাড়াও আরোও উপস্থিত ছিলেন, সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর সম্মানিত উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, প্রশিক্ষণার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে প্রধান অতিথি সিআরসিদের মনোমুগ্ধকর, আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন আন-আর্মড কমব্যাডসহ বিভিন্ন শরিরিক কসরত উপভোগ করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button