৬লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় মানবপাচার আইনে মামলা যশোরে

যশোর ব্যুরো ঃ সৌদিতে ভাল বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ৬লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সুবজ হোসেন নামে এক যুবককে পাচার করার অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ শনিবার দিবাগত গভীর রাতে মামলাটি রেকর্ড করেন। মামলায় বাদি হন যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে সবুজ হোসেন। মামলায় আসামী করা হয় একই পরিবারে বাবা,মা ও তাদের সন্তান। এরা হচ্ছে, ঝিনেদা জেলর মহেশপুর উপজেলার জিতেরপুর গ্রামের মৃত আব্দুস ছোবহান খন্দকারের ছেলে মফিজুর খন্দকার,তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম ও তাদের ছেলে রেফাত হোসেন।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন,আসামীরা দূর সম্পর্কের আত্মীয়। সেই সুবাদে বাদির সাথে আসামীদের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক। মফিজুর খন্দকারের বড় ছেলে মেহেদী হাসান দীর্ঘদিন যাবত সৌদিতে থাকার সুবাদে মফিজুর বিভিন্ন সময়ে সৌদিকে শ্রমিক পাঠানোর মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তারাই সুবাদে মফিজুর খন্দকার ও তার ছেলে রেফাত হোসেন এর মাধ্যমে বাদিকে সৌদিকে পাঠিয়ে দিতে পারবেন বলে মফিজুর খন্দকার বাদিকে প্রস্তাব দেয়। তখন বাদি মফিজুরের কথায় রাজী হলে রেফাত হোসেন বাদিকে অসাধুভাবে প্ররোচিত করে এবং মর্জিনা বেগম উদ্দেশ্যে মূলকভাবে বাদীকে প্রবঞ্চনা করে বিশ^াস করান যে, রেফাত হোসেনের কাছে নগদ ৬লাখ টাকা দিলে বাদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপদে সৌদিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এবং সৌদিতে অবস্থানরত মফিজুর খন্দকারের বড় ছেলে মেহেদীর দ্বারা বাদিকে বেশী বেতনে ও ভালো কাজের ব্যবস্থা করবে। বাদি তাদের অধিক সুযোগ সুবিধার আশ^াস ও প্ররোচিত কথায় রাজি হয়ে মফিজুর খন্দকারের কথামতো বাদি গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর আসামীদের বাড়িতে এসে বাদিকে বৈধ ভিসার মাধ্যমে সৌদিতে পাঠানোর জন্য মফিজুর খন্দকারের হাতে নগদ ৬লাখ টাকাসহ বাদির পাসপোর্ট জমা দেন। মর্জিনা বেগম ও রেফাত হোসেন বাদির টাকা গুনে নেন। পরবর্তীতে মফিজুর খন্দকার ও রেফাত হোসেনের সাথে মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী তাড়াতাড়ি সৌদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মর্জিনা বেগমকে বাদি চাপ দিলে মফিজুর খন্দকার ও রেফাত হোসেন বাদিকে সৌদি ভিসা দিয়ে গত ২ নভেম্বর বিমান যোগে সৌদিতে পাঠিয়ে দেয়। বাদি একদিন সৌদিকে রিসিভড ঘরে থাকার পর মফিজুর খন্দকারের সৌদি প্রবাসী বড় ছেলে বাদিকে নিয়ে একটি অজ্ঞাতস্থানে রেখে চলে আসে। বাদি সেখানে কয়েকদিন অপেক্ষা করে কোন ভাল বেতনের কাজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে ১৮ নভেম্বর সৌদি থেকে বাংলাদেশে চলে এসে বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানালে তারা আসামীদের সংবাদ দিয়ে বাদির বাড়িতে আসতে বলে। গত ৩ জানুয়ারী সকাল ১১ টার সময় আসামীগন বাদির বসত বাড়িতে আসলে বাদি তাদের বসত বাড়ির বারান্দায় বসে আসামীদেরকে বলে তার সাথে এমন কাজটি কেন করলে। তখন আসামীগন বাদিকে হুমকী দিয়ে বলে আর কখনও এমন কথা বললে বাদিকে খুন করে ফেলবে। সকল আসামীরা বাদিকে ভাল বেতনে ভাল কাজ পাওয়ার মিথ্যা আশ^াস দিয়ে উক্ত ঘটনা ঘটিয়ে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ধারার অপরাধ করেছে। বাদি কোতয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অনীহা জানালে বাদি আদালতের স্মরনাপন্ন হলে আদালতে মামলা করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক থানা কর্তৃপক্ষকে মামলা নিতে নির্দেশ দেয়।


