উন্নয়ন ও সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের আড়ালে নড়াইল জেলা পরিষদ এখন অনিয়ম ও হরি লুটের কারবারে পরিণত : দেখার কেউ নেই!

মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে
উন্নয়ন ও সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের আড়ালে নড়াইল জেলা পরিষদে একজন সার্ভেয়ার ও অফিস সহকারী যা ইচ্ছা তাই করছে। আয়ের সিংহভাগই ভোগ করার আশায় সুচতুরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরিষদের ১৫লাখ টাকার ভূয়া বিল বাবদ চেক প্রদান করে নিজেকে বাঁচানোর জন্য অন্য জেলায় বদলীর অর্ডার করে সেখানে যোগদান না করে বিদেশে সফর করার মধ্যে প্রধান কর্তা বদলী হয়ে চলে যাওয়ায় সেই বদলীর অর্ডার বাতিল করে বহাল তবিয়তে একই বেশ কয়েকটি দায়িত্ব পালন করছেন। সার্ভেয়ার হয়েও তিনি নিজেকে সার্ভেয়ার পরিচয় না দিয়ে প্রকৌশলীর পরিচয়ের দায়িত্ব পালন করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নড়াইল জেলা পরিষদ সূত্রে জানাগেছে, এখানে দীর্ঘদিন কর্মরত সার্ভেয়ার আবু হানিফ ভূয়া প্রকল্প বিল দিয়ে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। তিনি জেলা পরিষদের একটি উন্নয়ন মূলক প্রকল্প অর্থাৎ মাটি ভরাট বাবদ ১৫ লাখ টাকার কোন কাজ না করে একজন ঠিকাদারে সাথে চুক্তি করে অবমুক্ত করেছেন বিল।দীর্ঘদিন যাবত এ পরিষদে সহকারী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে সার্ভেয়ার আবু হানিফ নিজে জেলা পরিষদের প্রকৌশলীর যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যদিও এটা অনিয়ম জেনেও তিনি এই দায়িত্ব পালন করে জেলা পরিষদের অর্থ নিজের পকেট ভারী করে চলেছেন। তবে জেলা পরিষদ আইনে বলা আছে পরিষদের নিজস্ব কোন প্রকৌশলী না থাকলে জেলার এলজিইডি’র জেলা কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এই দায়িত্ব পালন করবেন। এই নিয়মতে তোয়াক্কা না করে সার্ভেয়ার আবু হানিফ একই ৩ পদের অধিকারী হয়ে কাজ করছেন। যার কারনে তিনি এখন নিজেকে সার্ভেয়ার পরিচয় না দিয়ে নিজেকে প্রকৌশলী হিসেবে পরিচয় তুলে ধরেন। ফলে ইতিপূর্বে নড়াইল জেলা পরিষদের ঠিকাদারী কাজের ১৫লাখ টাকার কোন কাজই না করে বিল দিয়েছেন ঠিকাদারের হাতে। সূত্রগুলো বলেছেন, জেলা পরিষদের সেই সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ মাহবুব-উর-রহমান এর নজরে উক্ত ভূয়া বিলের চেকের ঘটনা আসেন। তিনি নিজে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে ঘটনার সত্যতা পান। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব-উর-রহমান সার্ভেয়ার আবু হানিফকে কারণ দর্শানো নোটিশ ( শোক’জ) করেন। সার্ভেয়ার আবু হানিফ কারণ দর্শানো নোটিশের যুক্তিযুক্ত কারণ দেখাতে পারেননি সেই সময়। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সার্ভেয়ার আবু হানিফের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ গ্রহন করলে সুচতুর আবু হানিফ কৌশলে নড়াইলে সেই সময়ের জেলা প্রশাসককে ভূল বুঝিয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের মাধ্যমে নিজেকে নিরাপদ রাখতে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদে বদলীর আদেশ করান। বদলীর আদেশ করার পর তিনি সেখানে যোগদান না করে তিনি ভারতে ঘুরতে যান। ভারতে থাকা অবস্থায় নড়াইল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব-উর-রহমান অন্যত্র বদলী হয়ে যাওয়ার যার আবু হানিফের দূর্নীতির বিষয়টি ধামাচাপা হয়ে পড়েন। তখন আবু হানিফ সাতক্ষীরা জেলা পরিষদে বদলীর আদেশ করালেও সেখানে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয় আবু হানিফের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। তিনি সিপিপিসি প্রকল্পের সাইড পরিদর্শন ব্যতীরেকে প্রকল্পের সভাপতি ও জেলা পরিষদের অফিস সহকারী সনজয় কুমার দাসের সাথে করেন বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগি।সূত্রগুলো আরো জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের অফিস সহকারী সনজয় কুমার দাস জেলা পরিষদে নীতিমতো দায়িত্ব পালন না করে বাইরে একটি কুরিয়ার সার্ভিসে চাকুরী করেন। যা জেলা পরিষদের চাকুরী বিধিমালার পরিপন্থী। নড়াইল জেলা পরিষদে এ ধরনের অনিয়ম এখন শীর্ষে অবস্থান করলেও দেখার কেউ নেই। এ ব্যাপারে সার্ভেয়ার আবু হানিফের মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ পরিষদে স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না বিগত ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর দায়িত্ব পালন করলেও অনিয়ম তার চোখে পড়েন না। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নড়াইল জেলা পরিষদের সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্টি ও কর্মরত কর্মচারীরা।