কুরআনের বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে নারী সংস্কার কমিশন

# খুলনায় হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ #
# কুরআন সুন্নাহ বিরোধী সমস্ত সুপারিশ রুখে দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ
# কমিশন ও সুপারিশ বাতিলসহ ৫ দফা হেফাজত ইসলামের
স্টাফ রিপোর্টার ঃ গতকাল ২৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকাল চারটায় ডাকবাংলা চত্বরে বহুত্ববাদ ও নারী কমিশন বাতিলের দাবিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ খুলনা জেলা ও মহানগর শাখার প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল। জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুখতাক আহমেদের সভাপতিত্বে, জেলা সেক্রেটারি মুফতি আব্দুল্রাহ ইয়াহিয়া ও সহ-সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল্লাহ এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় হেফাজত নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসলাম, মুসলমান ও কুরআন-সুন্নাহ এর বিরুদ্ধে গিয়ে ফেরাউন নমরুদ যেমন টিকে থাকতে পারে নাই, বাংলাদেশে খুনি হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে, তেমনিভাবে ইউনুস সরকার ও যদি ইসলাম, মুসলমান ও কুরআন সুন্নাহ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ইউনুস সরকারও পালাতে বাধ্য হবে। অতএব অনতিবিলম্বে বহুত্ববাদ ও নারী বিষয়ক কমিশন বাতিল করতে হবে। তা না হলে তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় করা হবে। নারী সংস্কার কমিশন যৌনকর্মীদের শ্রমিকের মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। যা আমাদের মুসলিম অধ্যুষিত জনগোষ্ঠীর মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। আমরা তাদের পুনর্বাসন চাই। তাছাড়াও মিরাস আইন নিয়ে তাদের দাবিও আপত্তিজনক। তিনি এ কমিশন বাতিলে গ্রামে-গঞ্জে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ভারতে ওয়াক্ফ আইন পুরোপুরি বাতিল ও গাজায় গণহত্যা বন্ধেরও দাবি জানান বক্তারা। বক্তারা আরও বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাবের মাধ্যমে মূলত অবৈধ যৌনাচারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়েছে। যা একটি শালীন ও সভ্য সমাজে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা উত্তরাধিকার আইন সংশোধনের দাবি করে কুরআনের বিধানকে চ্যালেঞ্জ করার চরম ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ও ভরণপোষণের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইন অনুসরণকে বৈষম্য বলেও আখ্যা দিয়েছে বিতর্কিত নারী কমিশন। যা ইসলামের বিধানকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার শামিল। তারা এ দেশে বিজাতীয় অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটিয়ে ইহুদী, নাসারা, সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। অবিলম্বে গণবিচ্ছিন্ন, এনজিও মার্কা এ কমিশন ও তাদের ইসলাম বিরোধী প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে এবং ইসলামের বিধানের আলোকেই নারীবিষয়ক সংস্কার প্রস্তাব নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে।
বক্তারা বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের বেশকিছু সুপারিশ ইসলাম বিরোধী। হেফাজতের ন্যায্য দাবিগুলো উপেক্ষা করে কুরআন ও ইসলামী বিধান পরিপন্থী আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা দেশের জনগণ মেনে নেবে না। বিশেষ করে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত অনেক সুপারিশ সরাসরি কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে এসব সুপারিশ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি সরকার অবিলম্বে এ কমিশন বিলুপ্তি ঘোষণা সহ অন্যান্য দাবি মেনে না নেয়, তাহলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতো এ সরকারকেও ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। হেফাজতে ইসলামের পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে ঃ
আওয়ামী শাসনামলে শাপলা চত্বরের গণহত্যাসহ সকল গণহত্যার দ্রুত বিচার, হেফাজতের নেতাদের নামে দেয়া মামলা প্রত্যাহার, সংবিধান সংস্কার কমিশনের বহুত্ববাদের প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনা, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় আপত্তিকর ধর্মীয় বিধিবিধান বাতিল করা, ভারতের পার্লামেন্টে সম্প্রতি পাস হওয়া ওয়াকফ আইন সংশোধনী বাতিল এবং মুসলিম নির্যাতন বন্ধ করা। এছাড়া, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে। সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন মহানগর সভাপতি মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, মহানগর সেক্রেটারী মুফতি গোলামুর রহমান, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ, মুফতি হাফিজুর রহমান, মুফতি জিহাদুল ইসলাম, মুফতি কাইয়ুম, শরীফ সাইদুর রহমান, হাফেজ শহিদুল ইসলাম, মুফতি জাকির হুসাইন, মুফতি ইলিয়াস জাহানাবাদী, মাওলানা আশেকে এলাহী, মাওলানা কুদরত উল্লাহ, মাওলানা মুনিরুল ইসঃ, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মুফতি সালিমুল্লাহ, ইব্রাহিম খলিল, মাওলানা আহমাদুল্লাহ, মাওলানা হাবিবুর রহমান সহ থানা ও উপজেলা শাখার সভাপতি সেক্রেটারি বৃন্দ।