তেলিগাতী গ্রামের বিল ডাকাতিয়ার প্রান্তজুড়ে এখন পাকা খেজুরের হাত ছানি : প্রকৃতি প্রেমীকের মন ছুঁয়ে যায়

স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনার আড়ংঘাটার তেলিগাতী গ্রামের বিল ডাকাতিয়ার প্রান্তজুড়ে এখন খেজুর গাছগুলো যেন পাকা খেজুরের সুবর্ণ শোভায় হাত ছানি দিচ্ছে। বৈশাখের শেষে প্রকৃতির এই মনোরম রূপ যেন এক অপূর্ব চিত্রপট। সবুজের গায়ে ঝুলে থাকা সোনালি খেজুরের থোকা প্রকৃতি প্রেমীদের মন ছুঁয়ে যায়। গ্রামীণ পরিবেশে এমন এক নিসর্গ দৃশ্য যেন একান্ত আপন হয়ে ধরা দেয়। তেলিগাতী দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা বাকীউল্লাহ ঢালী বলেন, গত ২০/৩০ বছরের ব্যবধানে এ অঞ্চলের খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তের পথে। বিল ডাকাতিয়ার পাচুলোর ঘাট ছিল খেজুরের বাগান। শতশত খেজুর গাছ ছিল এখানে। পৌষ-মাঘ মাসে খেজুরের রস আর গুড় ছিল এ এলাকার মানুষের নিত্য দিনের খাবার। সাথে ছিল ভাটেল চাউলের ঝাউ। খেজুরের ঝোলা গুড়, নারকেল কোড়া আর ঝাউ ছিল প্রতিদিনের সকালের নাস্তা। এ মজাদার খাবার সামনে হাজির হলে জিহবার পানি ধরে রাখা অনেকের কাছে ছিল কঠিন। সরদার বাড়ির বাসিন্দা মরহুম গওহর সরদার ছিলেন অত্র এলাকার সবচেয়ে বড় গাছি। তিনি একাই কয়েকশত খেজুরের গাছ কাটতেন। তিনি শেষ জীবনে তেলিগাতী দক্ষিণপাড়ায় তার মেয়ে জাহেদা বেগমকে বিয়ে দিয়ে সেই জামাতার বাড়িতে থেকে খেজুরের গাছ কাটতেন। জামাতা মরহুম হাফেজ তরিকুল ইসলামের বাড়ির উঠানে প্রতিদিনই খেজুরের রস আগুন দিয়ে জ্বালানো আর গুড় তৈরী করার দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এলাকার ছেলেরা পাঠখড়ি দিয়ে চুরি করে খেজুরের রস খেত। তা নিয়ে গাছি গওহর সরদারের বকাঝকা করতে প্রায় শোনা যেত। তারপরও তিনি খেজুর গাছ কাটতে পিছ পা হতেন না। এখন এলাকায় ২/৪টা খেজুর গাছ থাকলেও গাছির অভাবে তা কাটা হয় না অনেক সময়।