জাতীয় সংবাদ

ষড়যন্ত্র ও চাপ অতিক্রম করার সাহস সরকারের আছে : কাদের

প্রবাহ রিপোর্ট : সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আছে, দেশ-বিদেশি চাপ আছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু সেই চাপ এবং ষড়যন্ত্র অতিক্রম করার ক্ষমতা ও সাহস সরকারের কাছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার নতুন মন্ত্রিসভায় চতুর্থবারের মতো সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর সচিবালয় প্রথম দিন নিজ কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের এই মন্তব্য করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন দেশি-বিদেশি চাপের বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারে বারে বলেছেন। চাপ বিদেশ থেকেও আছে দেশেও আছে। কিন্তু আমরা অতিক্রম করার ক্ষমতা রাখি। সাহস রাখি, সামর্থ্য রাখি। আমাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ, আমাদের সম্পর্ক মাটি আর মানুষের সঙ্গে। মাটি আর মানুষের সঙ্গে যে দলের- যে সরকারের সম্পর্ক সেই দল কোন বিদেশি চাপ বা দেশি চাপ, কোন চাপের কাছেই নতিস্বীকার করে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি পথে পথে বাধা পদে পদে বাধা, সেটা আমরা অতিক্রম করেছি। আমরা অতিক্রম করেছি নির্বাচনী পরিস্থিতি, নির্বাচন তো হয়েই গেছে। অনেকে বলেছেন নির্বাচন তো করতে পারবে না, তাদের সেই স্বপ্ন তো স্বপ্নই রয়ে গেছে। আমাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়িত করেছি। এখন আমাদের ওপর চাপ আসবে আমরা জানি, বিদেশি চাপ আসবে, নানান ধরনের, আমাদের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রও আছে। এগুলো অতিক্রম করতে হবে এগুলোকে ভয় পেলে চলবে না, সাহস রাখতে হবে। সেতু মন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য দেখতে পাচ্ছেন বাজারে, মানুষ কষ্ট হচ্ছে, কিছু মানুষ নিম্ন-স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে, এ কষ্ট লাঘব করা দরকার। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে। দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব। দেশি-বিদেশি সব চাপ অতিক্রম করার পেছনে আমাদের মূলশক্তি আমাদের জনগণ। বিরোধীদল আবার নতুন করে নির্বাচন দাবি করছে। এতে বিদেশিদের কোন ইন্ধন আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, তা আমি জানি না। তবে এটা মামার বাড়ির আবদার। তিনি আরও বলেন, এ দেশটা আমাদের সকলের, আমরা ক্ষমতায় আছি বলে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের এমন দাবি তো আমরা করি না। সবারই শুভবুদ্ধি হওয়া দরকার। ষড়যন্ত্র করে দেশের উন্নতি-সমৃদ্ধি হয় না। দেশের উন্নয়ন অর্জন সবার অর্জন। যানবাহন চলাচলে এখনো পুরোপুরি শৃঙ্খলা অর্জিত হয়নি বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, আশা করছি, এ যাত্রায় আমরা শেষ গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবো। আমাদের অনেকগুলো কাজ আছে, এর মধ্যে আমি এখনো বলি, সড়কে শৃঙ্খলা, যানবাহনে শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমরা এখনো অর্জন করতে পারিনি। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন। তবে আমি মনে করি, জীবনের কোনো চ্যালেঞ্জই অনতিক্রম্য না। সব চ্যালেঞ্জই আমরা অতিক্রম করতে পারি। আমরা যখন পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু করি, তার আগে কেউ ভাবেনি যে পদ্মাসেতু হবে এবং পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ যখন সমাপ্ত হয়, যেখানে বিশ্বব্যাংক ছিল না, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু আমরা করেছি, বলেন মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেউ ভাবেনি ঢাকায় আধুনিক মেট্রোরেল হবে। আমাদের সামনে আরও পাঁচটি মেট্রোরেলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন। এরইমধ্যে দুটি পাতাল রেলের, একটিতে ১৩ কিলোমিটার, আরেকটিতে ২১ কিলোমিটার, কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের টার্গেট ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শেষ করবো। আজ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আমরা বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত করেছি। বাকি কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আমরা একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তবে আশা করি, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সড়কে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারবো। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, সড়ক ও পরিবহন-দুক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। আমরা এ কাজটিতে বেশি নজর দিচ্ছি। সড়ক বানাবো, সড়কও স্মার্ট হবে। এক পশলা বৃষ্টিতে রাস্তা অস্তিত্ব থাকে না, এমন সড়ক করে লাভ নেই। আমরা এটিতে আরও গুরুত্ব দেব। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ মতবিময় অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button