জাতীয় সংবাদ

অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংয়ের ২৭ সদস্য

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ২৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)। প্রভাবশালীদের মদতে দিন দিন ঢাকায় কিশোর গ্যাংয়ের রাজত্ব বাড়ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ কার‌্যালয়ে গ্রেপ্তারদের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাং সদস্যরা হলেন- মো. রাব্বি (২০), মো. হৃদয় (২০), মো. মুন্না (২০), মো. হাসান (২০), আবদুর রশিদ এসহাক ওরফে রকি (২৬), মো. শুভ (২০), মো. সিফাত (১৮), মো. রাকিব (১৮), মো. তন্ময় হোসেন (১৮), মো. মিলন (১৯), মো. রাজন (১৯), মো. ইয়াছিন (১৯), মো. ইমন (১৮), আবু তাওহীদ সাফির (২০), মো. সিয়াম (১৯), মো. রাকিবুল ইসলাম (২০), মো. জাকির হোসেন (৩০), মো. রাকিব (২৩), মো. নাফিস হোসেন মুন্না (২৪), মো. শুভ (২২), মো. রবিউল শেখ (২৪), মো. মোশারফ (২৫),মো. সোহেল (২৭), মো. শুভ (২৭), মো. বাবুল খান (৩৬) মো. নজরুল হক (৩২) ও মো. বাবুল হোসেন (৩৬)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি চাপাতি, ২টি ক্ষুর, ১০টি চাকু, ১টি স্টিলের ব্রাস নাকল্স, ২টি সুইচ গিয়ার, ১টি চাইনিজ চাকু, ১টি এন্টিকাটার, ১টি কাঁচি, ১টি লোহার রড, ২৫টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিমকার্ড এবং নগদ ১৪ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যদের ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। কিশোর গ্যাং, গ্যাং কালচার, উঠতি বয়সের ছেলেদের মাঝে ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক গ্রুপের সঙ্গে অন্য গ্রুপের মারামারি আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কোনো ঘটনায় কেউ কোনো প্রতিবাদ করলে ক্ষমতা জাহির করতে মারামারি করাসহ অনেক সময় খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এছাড়াও তারা বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে মাদক কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। এই সন্ত্রাসীদের হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি ও মামলা রুজু হয়। তিনি বলেন, শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, শ্যামপুর, বংশাল ও তার আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকা- সম্পর্কে তথ্য পায় র‌্যাব। এর ফলে র‌্যাবের টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয় এবং সেসব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের নামে পেশীশক্তি প্রদর্শন করে আসছিল। মাদক সেবন, সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল চালিয়ে বিকট শব্দ করে জনমনে ভীতির সঞ্চার, স্কুল-কলেজে বুলিং, র‌্যাগিং, ইভটিজিং, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাদক সেবন, অস্ত্র প্রদর্শন এবং অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানা অনৈতিক কাজে লিপ্ত। ফলে কিশোর গ্যাংয়ের বিপথগামী সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল তারা। গ্রেপ্তার গ্রুপগুলোর মধ্যে রকি গ্রুপটি রাজধানীর শ্যামপুর কদমতলী, যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় আসামি রকির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তারা এসব এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি, মারধরসহ অপরাধমূলক কার্যক্রম করে থাকে। তাদের মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার। এছাড়াও তারা রকির নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। গ্রেপ্তাররা কিশোর গ্যাং সদস্যরা পেশায় গাড়ির হেলপার ও ড্রাইভার, গ্যারেজ মিস্ত্রি, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণশ্রমিক, পুরনো মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা হলেও মূল পেশার আড়ালে তারা মূলত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল। এসব কিশোর গ্যাং সদস্যরা কাদের নেতৃত্ব এমন কার্যক্রম করত এবং তাদের বিরুদ্ধে আপনারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, এলাকার প্রভাবশালীদের মদতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা রাজত্ব করছিল। তাদের পেছনে আমাদের গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button