আজকের ছবিটি ঐতিহাসিক হবে, সংগ্রহে রাখুন : আদালত প্রাঙ্গণে ইউনূস
প্রবাহ রিপোর্ট ঃ গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিন পেয়ে আদালতের সাংবাদিকদেরকে তার ছবি তুলে তা সংগ্রহ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। তার মতে এই ছবিটি ‘ঐতিহাসিক’ হয়ে যাবে। গতকাল রোববার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজের এজলাস থেকে থেকে জামিন আদেশ পেয়ে বেরিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। ইউনূস বলেন, “আজকের এ ছবিটা আপনারা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশন ও বটতলার এটি একটি ঐতিহাসিক ছবি হয়ে থাকবে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এটি প্রকাশিত হবে। যুগ যুগ ধরে নানান বইতেও এটা প্রকাশিত হবে। আপনারা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবেন।” মামলাটি যুক্তিযুক্ত কি না, সেটি নিয়ে ভাবতেও সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি। বলেন, “আপনারা বিবেচনা করুন, দুর্নীতি দমন কমিশন আজকে একটি বিচারে বসাল, এটা সঠিক কারণে হয়েছে কি না, সঠিকভাবে হয়েছে কি না। “এ দিনে দুদকের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হল একজন নোবেল বিজয়ীকে। এটা রেকর্ডেড। জাতির অংশ হয়ে থাকবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করব নাকি অপরাধ বোধ করব? যারা সারাজীবন খেটে এ প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে গেলেন, তাদেরও মামলার আসামি করা হল!” গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের ‘ঠকানোর’ অভিযোগে মোট দুটি মামলার আসামি হয়েছেন ইউনূস। এর মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগ এনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের মামলায় তাকেসহ চার জনের ছয় মাসের কারাদ- হয়েছে গত ১ জানুয়ারি। তবে এক মাসের মধ্যে আপিলের শর্তে কারাগারে যেতে হয়নি তাকে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই আপিল করেন তিনি। এরপর তাকে জামিন দেওয়া হয়। সেই জামিনের মেয়াদ শেষে গতকাল রোববার আদালতে হাজির হয়ে নতুন করে জামিন আবেদন করেন ইউনূস। ট্রাইবুনালের বিচারক এম এ আউয়াল শুনানি শেষে তার আবেদন গ্রহণ করে আগামী ১৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ রাখেন। প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অন্য মামলাটি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। গত ২৯ জানুয়ারি ওই অভিযোগপত্র অনুমোদন করে দুদক। ১ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র আদালতে জমা পড়লে বিচারক ৩ মার্চ আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণ এবং মামলা আমলে নেওয়ার শুনানির তারিখ রাখে। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে ইউনূস জামিনের আবেদন করলে দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে তার আবেদন গ্রহণ করা হয়। আদালত থেকে বেরিয়ে এসে ইউনূস বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। এ দিনটি আপনারা স্মরণ করে রাখুন। “এটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আইন মানুষের শুভ কামনার জন্য তৈরি করা হয়। আইন মানুষকে যেমন শান্তিতে রাখে তেমনি আশঙ্কা এবং ভয়ংকর শঙ্কাও সৃষ্টি করে। আইনকে আমরা কোন দিকে নিয়ে যাব, এটা সমাজের ইচ্ছা।”