জাতীয় সংবাদ

ঈদের অজুহাতে রপ্তানি পণ্য পরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া

প্রবাহ রিপোর্ট : ঝুঁকি এড়াতে ঈদের ছুটির আগেই রপ্তানি পণ্য জাহাজে তুলতে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে পাঠিয়ে দেন তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানিকারকরা। এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছেন ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিকরা। ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সংকটের অজুহাতে ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিকদের দাবি, যথাসময়ে পণ্য খালাস করতে না পারা রপ্তানি পণ্য নিয়ে আসা অনেক গাড়ি ডিপোতে আটকা পড়েছে। সেই সঙ্গে আন্ত জেলার অনেক গাড়ি পণ্য হস্তান্তর করে আর না ফেরায় পরিবহন সংকটের কারণে ভাড়া বেড়েছে। ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিকদের সূত্রে জানা যায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান জাহাজীকরণের জন্য চট্টগ্রামের বেসরকারি ডিপোগুলোতে আনা হয়। সেখান থেকে পণ্যগুলো জাহাজীকরণ করে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেন ব্যবসায়ীরা। পাঁচ দিন আগেও ওসব এলাকা থেকে আট টনের একটি ট্রাকের ভাড়া ছিল ১২ হাজার টাকা। এখন সেটা ২২ হাজার। আর ১৩ টনের ট্রাকের ভাড়া বেড়েছে ১০ হাজার টাকা। আগে ভাড়া ছিল ১৭ হাজার। আর এখন একই ট্রাক ভাড়া ২৭ হাজার টাকা। একইভাবে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে কাভার্ড ভ্যানের ভাড়াও। ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, বৈশ্বিক মন্দায় পোশাকের অর্ডার কম থাকায় এ বছর ঈদের আগে চট্টগ্রাম বন্দরমুখী রপ্তানি পণ্যের অতিরিক্ত চাপ নেই। এর পরও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামমুখী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের ভাড়া বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার ভাড়া গিয়ে ঠেকেছে ২২ থেকে সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকায়। এ জন্য ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার ও আইসিডিগুলোর সমন্বয়হীনতাকে দুষছেন তাঁরা। ডিপোগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকটি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোর সামনে পণ্যবোঝাই গাড়ির কিছুটা জট থাকলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। যদিও বেশির ভাগ কনটেইনার ডিপোর নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চালকরা। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, ফেব্রুয়ারিতে ৫৭ হাজার টিইইউএস (২০ ফুট কনটেইনারের একক) কনটেইনার রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়েছে। আর মার্চে বেড়েছে ৬৪৭ টিইইউএস। তিনি বলেন, এবার আমরা সেই চাপ ততটা অনুভব করছি না। ঈদের আগের কিছুটা চাপ আছে। গাড়ি আনলোড করতে তিন-চার ঘণ্টা লাগছে। এখন অনেকটা স্বাভাবিক। চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, আগের ১৫ হাজার টাকার ভাড়া এখন দিতে হচ্ছে ৩০-৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কারণ ঈদের আগে অনেক কারখানার মালিক ঝুঁকি কমাতে রপ্তানি পণ্য দ্রুত জাহাজীকরণের দিকে মনোযোগ দেন। এ সুযোগেই তাঁরা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের সংকট তৈরি করে ভাড়া বাড়িয়ে দেন। ট্রাক-কাভার্ড ভানের মালিকরা আমাদের এক প্রকার জিম্মি করে ভাড়া আদায় করছেন। প্রতিবছর ঈদ এলেই একভাবে তাঁরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুফিউর রহমান টিপু বলেন, ঈদের কারণে যেহেতু গাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। সে কারণে রপ্তানি পণ্যের চাপ বাড়ে। তাই গাড়ির চাহিদাও বাড়তে থাকে। ভাড়াটাও এমনিতেই বেড়ে যায়। তবে গাড়ির চাপ কমে এলে ভাড়াও অটোমেটিক কমে আসবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button