জাতীয় সংবাদ

ফরিদপুরে ১৫ জনের মৃত্যু: অপেশাদার লাইসেন্সে ১৩ বছর ধরে বাস চালাচ্ছিলেন চালক

প্রবাহ রিপোর্ট : ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার বাসচালক খোকন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য। তিনি র‌্যাবের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তার কোনো পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। হালকা গাড়ি চালানোর লাইসেন্স আছে। এই লাইসেন্স দিয়েই ১৩ বছর ধরে ভারি যানবাহন চালিয়ে আসছেন তিনি। তাকে কেউ আটকালে সেখানে টাকা দিয়ে ও নানা উপায়ে পার হয়ে যেতেন খোকন। র‌্যাব-১০ এর সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, খোকন মিয়া জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, এ ১৩ বছরে তিনি কখনো দুর্ঘটনা ঘটাননি, ফরিদপুরের দিগনগরেই প্রথম দুর্ঘটনা ঘটে। যে দুর্ঘটনায় মারা যান ১৫ জন। গত ১৬ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুর-খুলনা মহাসগড়কের কানাইপুরের দিগনগরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তখন বাসের চালক খোকন পালিয়ে যান। সেদিন রাতে তাকে একমাত্র আসামি করে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে র‌্যাব-১০ অভিযান চালিয়ে ২১ এপ্রিল দুপুরে ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর এলাকা থেকে খোকন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার দিন একটানা বাস চালাচ্ছিলেন খোকন মিয়া। মাঝে মাত্র একঘণ্টা বিশ্রাম নিতে পেরেছিলেন। দুর্ঘটনার আগের দিন ১৫ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে বাস নিয়ে রাত ৩টায় ঢাকার গাবতলী পৌঁছান। সেখানে মাত্র একঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে ফের ভোর ৪টায় গাবতলী থেকে জীবননগরের উদ্দেশে বাস ছাড়েন। পথে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিকনগর এলাকায় তার বাসের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১৫ জন নিহত হন। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, এভাবে একনাগাড়ে চালকদের দিয়ে বাস চালাতে বাধ্য করা কতটা যৌক্তিক ছিল, বাস মালিকপক্ষের এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে শাইখ আকতার বলেন, ইউনিক পরিবহনের যে বাসটি খোকন চালাতেন, সে বাসের মালিকানা তিনবার বিক্রি করা হলেও রেজিস্ট্রেশন ছিল প্রথম মালিকের নামেই। পরে যারা বাসের মালিকানা কিনে নেন তারা আর পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করেননি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button