জাতীয় সংবাদ

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

এফএনএস: আজ বুধবার ১১ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনেও বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনী ও দখলদার বাহিনীর মধ্যে সম্মুখ সমর চলে। তবে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্বসমর্পণের খবরে স্বাধীনতাকামী এ দেশবাসীর মনে বিজয়ের আশা-প্রত্যাশা বহুগুণে বেড়ে যায়। স্বাধীনতা লাভ প্রশ্নে যে সংশয়, কালোমেঘ দেখা দিয়েছিল তা ধীরে ধীরে কেটে যেতে থাকে।

এদিন জামালপুর থেকে আগত ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১০১ কমিউনিকেশন জোন টাঙ্গাইলের মুক্তিবাহিনীর সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতায় সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। সম্মিলিতবাহিনীর এই অংশটিই প্রথম ঢাকায় প্রবেশ করেছিল। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনীর আত্বসমর্পণের ঘটনায় এই দলের ভূমিকা ছিল প্রধান। জামালপুর পতনের পর টাঙ্গাইলে অবস্থানরত পাক সেনারা শহর ছাড়তে শুরু করে। ঢাকা আসার পর সেদিন প্রায় ৪ হাজার পাকিস্তানী সেনা মুক্তিবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিল।

একাত্তরের ১১ ডিসেম্বর ভারতীয় বিমানবাহিনী ঢাকায় কোন হামলা চালায়নি। বিদেশী যাত্রীদের সুবিধার্থে তেজগাঁও বিমানবন্দরে মেরামত ও যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। পাকিস্তানী সেনাদের উপর ঢাকা ত্যাগের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এদিন পূর্ব পাকিস্তানের গবর্নর ডা. এম এ মালিক জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করে যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তাতে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানী প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকায় সরকার গঠনের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। কি পরিস্থিতির কারণে এ আহবান কোনো কাজে আসেনি। পাকিস্তানী সেনাদের সামনে একটি উপায় ছিল আত্বসমর্পণ করা। একাত্তরের আজকের দিনে অন্য এলাকার মতো জামালপুর, রায়পুরা (নরসিংদী), নড়াইল, কুষ্টিয়া, মনিরামপুর (যশোর), শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), পীরগাছা (রংপুর), টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, লাকসাম (কুমিল্লা), হাকিমপুর (দিনাজপুর) ও নান্দাইল (মোমেনশাহী) শত্রুমুক্ত হয়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত সময়ে টাঙ্গাইল শহরের মুক্তি অর্জন ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। কেননা টাঙ্গাইল শহর মুক্ত করার মধ্য দিয়ে ঢাকা মুক্ত করার এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পথ খুলে গিয়েছিল। বাংলাদেশের দিগন্তে স্বাধীনতার উজ্জ্বল সূর্য উদয়ের পথ সুগম ও সুনিশ্চিত হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button