শুরুর দশ ওভার ‘টার্নিং পয়েন্ট’ ছিলো: দক্ষিণ আফ্রিকা
স্পোর্টস ডেস্ক : মেঘলা কন্ডিশনে টস জিতে ব্যাটিং নিলেন টেম্বা বাভুমা। প্যাট কামিন্স জানালেন, তিনিও একই সিদ্ধান্ত নিতেন। যথার্থতা প্রমাণ করতে পারলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে গেলেন তারা। ডেভিড মিলারের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই করার পুঁজি গড়তে পারল প্রোটিয়ারা। তবে দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম দশ ওভারে দাপট দেখাল অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত তারাই জিতল ম্যাচ। প্রোটিয়াদের মতে, ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে দুই ইনিংসের এই বিশ ওভারই। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনাল ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ¯্রফে ২১২ রানের স্কোর নিয়েও বোলিংবান্ধব উইকেটের পূর্ণ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ৪৭.২ ওভার পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে আটকে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এক পর্যায়ে ম্যাচ জেতারও সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাভুমার দল। কিন্তু এলোমেলো কিছু ফিল্ডিং, নেওয়ার মতো কিছু ক্যাচ ছেড়ে পঞ্চমবারের মতো সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচের কিছু অংশে চাপে পড়লেও দাপট অবশ্য ছিল অস্ট্রেলিয়ারই। প্রথম ইনিংসে পাওয়ার প্লেতে ¯্রফে ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেয় তারা। ১২ ওভারের মধ্যে ¯্রফে ২৪ রানে তারা ড্রেসিং রুমে ফেরত পাঠায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে। সেখান থেকে মিলারের সেঞ্চুরি ও হাইনরিখ ক্লসেনের চল্লিশ ছোঁয়া ইনিংসে দুইশ ছাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়াও পাওয়ার প্লেতে হারায় ২ উইকেট। তবে তারা করে ফেলে ৭৪ রান। রীতিমতো তা-ব চালান দুই ওপেনার ট্র্যাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনের জুটিতে ¯্রফে ৩৮ বলে আসে ৬০ রান। এমন উড়ন্ত শুরুর পর বাকি ব্যাটসম্যানদের আর ওভারপ্রতি রানের চাহিদা নিয়ে ভাবতে হয়নি। পরে স্পিন সহায়ক উইকেটে তাবরাইজ শামসি ও কেশভ মহারাজরা দারণ বোলিং করলেও, রয়ে-সয়ে খেলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে পরাজয়ের কারণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শুরুতে যেন বাকহারা হয়ে যান প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমা। “আসলে ব্যাখ্যা করা খুব কঠিন। ম্যাচের বড় একটা অংশজুড়ে তারা দারুণ দুর্দান্ত ছিল। জয় তাদের প্রাপ্য। ফলের দিকে তাকালে আমার মনে হয়, ব্যাটিং ও বোলিংয়ে আমরা যেভাবে শুরু করেছি, সেটিই হয়তো টার্নিং পয়েন্ট ছিল। সেখানে আমরা খুব বাজেভাবে হেরেছি। পরে ম্যাচে ফেরার জন্য বাকি সময় তাদেরকে তাড়া করতে হয়েছে আমাদের।” “কন্ডিশনের সঙ্গে দারুণ মানের বোলিং আক্রমণের মিশেলেই (দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুর বিপর্যয়)। শুরুতে হেইজেলউড ও স্টার্ক অপ্রতিরোধ্য ছিল। কন্ডিশন থেকে পাওয়া সুবিধার পুরোটা কাজে লাগিয়েছে তারা। যা আমাদের অনেক চাপে ফেলে দিয়েছে। আপনি যখন ২৪ রানে ৪ উইকেট হারাবেন, তখন ভালো একটা সংগ্রহ দাঁড় করানো সবসময়ই কঠিন।” পরে সংবাদ সম্মেলনে মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশনে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাট ধরেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ রব ওয়াল্টার। ম্যাচ হারের পেছনে তিনি দায় দেন ব্যাটিং ইনিংসের শুরুর দশ ওভারকে। “সত্যি বলতে কেউই বুঝতে পারেনি প্রথম ১২ ওভারে পিচ এমন আচরণ করবে। এমনকি যেসব ধারাভাষ্যকারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তারাও না। পিচ আমাদের প্রত্যাশানুযায়ী আচরণ করলে হয়তো ২৭০ পর্যন্ত যেতে পারতাম। আর একবার ২৭০ রান করার পর, যেমন টার্ন হচ্ছিল সন্ধ্যার দিকে, আমরা জানতাম আমাদের সুযোগ থাকবে।” “আমরা যথেষ্ট রান করতে পারিনি। এখন হেরে যাওয়ার পরে হয়তো বলা সহজ। তবে যদি ওই প্রথম দশ ওভার ভিন্ন রকম হতো, তাহলে এখন যতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি লড়াই হতো ম্যাচে।”