যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে

নির্বাচনী সহিংসতা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণাকালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংহিংসতার ঘটনা ঘটছে। অপ্রত্যাশিত হলেও আমাদের দেশে এগুলো যেন রীতিতে পরিণত হয়েছে। ফলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে জনমনে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা নির্বাচনে নাশকতা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিছু বিরোধী দলের নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা এবং ট্রেনে অগ্নিসংযোগসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা এ শঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে নিরপেক্ষভাবে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে মাঠপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সাধারণত নির্বাচন ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। তবে প্রশাসনের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় দুষ্কৃতকারীদের নাশকতা, আতঙ্ক ও শঙ্কা সৃষ্টির মতো পরিবেশ মোকাবিলা করা। অবশ্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, এবার সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তোলার মতো সক্ষমতা তাদের রয়েছে। বিষয়টি স্বস্তির হলেও সময়েই জানা যাবে প্রকৃত অবস্থা। এর আগে বিভিন্নভাবে জ¦ালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম যারা ঘটিয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে উপর্যুক্ত দাবির যথার্থতা প্রমাণিত হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দলের প্রতি আমাদের আহ্বান, তারা যেন আচরণবিধি মেনে সব কর্মকা- পরিচালনা করেন। নির্বাচনের বৈতরণী পাড়ি দিতে গিয়ে যেন কারও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির কারণ না হন। সবারই মনে রাখা দরকার, গণতন্ত্র এক ধরনের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থা। গণতন্ত্র ও নির্বাচন সমার্থক নয়, তবে দ্বিতীয়টি প্রথমটির পরিপূরক। নির্বাচন ছাড়া যেমন গণতন্ত্র হয় না, তেমনি গণতন্ত্র ছাড়া নির্বাচন প্রায় অর্থহীন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন ছাড়া শান্তি কায়েম অবাস্তব ধারণা। গণতন্ত্রের প্রাণ হলো নির্বাচন, আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল এজেন্ডাই হলো সর্বাত্মক শান্তি প্রতিষ্ঠা। স্বভাবতই নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ধরনের সংঘাত, সংঘর্ষ, সর্বোপরি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি কাম্য নয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিশ্চিন্ত মনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে পারলেই তাতে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। আমরা আশা করি আগামী সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, যা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের পথে বাধা। আমরা চাই, এগুলো বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।