সম্পাদকীয়

রাস্তা সংকুচিত করে পার্কিং; মানুষের ভোগান্তি কমাতে ব্যবস্থা নিন

রাস্তার পাশে লাইন ধরে গাড়ি পার্কিং করা হয়। এতে করে দুর্ভোগে পড়ে রাস্তায় হাঁটাচলা করা পথচারীরা। রাস্তায় হাঁটাতো দূরের কথা তখন স্বাভাবিক ভাবে দুটি গাড়ি একসাথে চলতেও পারে না। কখনো কখনো একটি গাড়ি অন্য একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে এসকল পার্কিং করা গাড়ির সাথে লেগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। অনেক সময় সৃষ্টি হয় মারাত্মক যানজট। রাস্তার পাশে ফুটপাতে এখন হাঁটার কোনো স্থান নেই। যেখানেই যাবেন বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ইত্যাদি নিয়মিতভাবে পার্কিংয়ে থাকবে রাস্তায়। আর ফুটপাতে থাকবে ছোট ছোট নানা ব্যবসায়ী নিজেদের পসরা সাজিয়ে। যানজট থেকে রেহাই নেই নগরবাসীর। চলার গতি হঠাৎ থমকে যায় দীর্ঘ যানজটে। আর এ অসহনীয় যানজটের মূল কারণই রাস্তার পাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত দখল করে বসা হকাররা। নগরীর অনেক ফুটপাত বেদখলে। সেই সঙ্গে রাস্তার পাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং তো আছেই। বিশেষ করে নিউমার্কেটের দক্ষিণ পাশের ব্যস্ত সড়কটিও বাদ নেই অবৈধ গাড়ি পার্কিং আর হকারদের দখল থেকে। এ সড়কের দুই পাশে দিনভর অসংখ্য গাড়ি পার্ক করে রাখার কারণে গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে এসব এলাকায়। ফলে এই এলাকার যাতায়াতকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এছাড়াও ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিল, কমলাপুর, আরামবাগ, ফকিরেরপুল, কারওরানবাজার সহ সংলগ্ন এলাকার কয়েকটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত গাড়ি রাখার স্থানে পরিণত হয়ে আসছে। এর সাথে যত্রতত্র বাস, কার, মাইক্রোবাস ও পিকআপ ভ্যান পার্ক করার ফলে সড়কগুলোতে যানচলাচলের পথ কমে গেছে। ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব এলাকার চিত্র মোটামুটি একইরকম। ধারণক্ষমতার বাইরে মাত্রাতিরিক্ত গাড়ির ভারে রাজধানীর রাস্তাগুলোর অবস্থা যখন বেহাল তখন পার্কিং ছাড়াই শত শত ভবনের অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে রাজউক। তবে একথা সঠিক যে অনেকেই রাজউকের নিয়ম মানছে না। বা মানানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে, রাস্তার ধারণ ক্ষমতা না থাকলেও বিআরটিএ পুরাতন লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা গাড়িরও ফিটনেস সার্টিফিকেট দিয়ে চলেছে। এসব কারণে যানজট দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। কিছু নীতিমালা মানতে বাধ্য করতে হবে। বাস-ট্রাক পাশাপাশি নয়; সামনে-পেছনে লাইন বরাবর দাঁড়াতে পারবে, অন্যথায় জরিমানা গুনতে হবে। এছাড়াও রিকশা দাঁড়ানোর জায়গা নির্দিষ্ট করতে হবে। মোড়ে না দাঁড়িয়ে কোথায় যাত্রী ওঠানামা করলে ভালো হবে, সে স্থান নির্দিষ্ট করতে হবে। আর সবচেয়ে মূল বিষয় হল সকল ধরনের গাড়ির অবৈধ পার্কিংকে বন্ধ করতেই হবে। অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা না গেলে যানজটও নিরসন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button