শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক জনসভা আজ

কৃতজ্ঞতা জানাতে লাখো জনতার ঢল
বিমল সাহা : দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অবহেলিত জনপদে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি নতুন করে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে খুলনাসহ এর আশপাশের জেলাগুলোতে। অভূতপূর্ব উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ আবারও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। চাওয়ার চেয়ে বেশি পাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ আজ কৃতজ্ঞতা জানাতে হাজির হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায়। প্রতিবারই নির্বাচনের আগে খুলনায় আসেন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। তবে এবারের তার আগমন ঘটছে ভিন্ন এক অনুভূতি নিয়ে। নির্বাচনের আগে জনসভায় তার দেওয়া ভাষনে নানা প্রতিশ্রুতি থাকে খুলনাবাসীর জন্য। এবছরও হয়তো থাকবে। তবে আজকের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাবেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। কেননা বিগত ১৪ বছরে খুলনার মানুষ যখন যেটা দাবী তুলেছে তার শতভাগ পূরণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ভালবাসা ও আন্তরিকতায় প্রচেষ্টার ফলে। জোট সরকারের আমলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছিল অবহেলিত জনপদ। এই জনপদে উন্নয়নতো দুরের কথা সন্ত্রাস নৈরাজ্যে বিভীষিকাময় দিন পার করেছে সাধারণ মানুষ। মুখ থুবড়ে পড়েছিল ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল কর্মকা-। শিল্প নগরী খুলনা পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরিতে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে সেই চিত্রের পরিবর্তন হয়েছে। রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন, কল-কারখানা চালু, একের পর এক নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা ও যোগযোগ ব্যবস্থায় অভুতপূর্ব উন্নয়ন এ অঞ্চলে আমুল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। খুলনা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি ড. মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে এসেছে আমুল পরিবর্তন। এ অঞ্চলে মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়, কৃষি বিশ^বিদ্যালসহ হাজারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার পাশাপাশি নতুন নতুন ভবন ও যোগ হয়েছে আধুনিক স্থাপনা। অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ায় শিক্ষকদেরও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে আবারও ভোট দেওয়ার পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত। খুলনা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোঃ মেহেদী নেওয়াজ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, বর্তমান সরকারের বিগত তিন সময়ে খুলনায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেড হয়েছে, আরও ৫০০ বেড সংযোজন করার কাজ চলছে। নতুন করে বিশটি আইসিইউ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বিগত সময়ে যে আবু নাসের বিশেষায়িত হাপাতাল বন্ধ ছিল সেখানে জটিল রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সদর হাসপাতাল ২৫০ বেডে উন্নিত হয়েছে। ৮টি বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগে চিকিৎসকদের সময়মত পদোন্নতি হতো না, যা এখন যথা সময়ে হচ্ছে। তিনি দাবী জানিয়ে বলেন, চিকিৎসকদের ক্যাডার বৈষম্য দূর, নতুন পদ সৃষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে এ অঞ্চলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হবে। খুলনা চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন পদ্মা সেতু দিয়ে এ অঞ্চলের যেকোন মানুষ যখন ঢাকায় যান, তখন তিনি বুঝতে পারেন যোগাযোগ ব্যবস্থা কতটা সহজ হয়েছে। এছাড়াও রেল যোগাযোগ ও মোংলা পোর্টের আধুনিকায়ন মানুষের ভাগ্যে নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছে। সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ ও নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। সর্বোপরি যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন হওয়ায় ব্যবসা-বানিজ্যে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।’ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, খুলনার মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালবাসা বা দরদ কতটা তা মানুষ বুঝতে পেরেছে। খুলনার উন্নয়নে তার অসামান্য অবদান সকলে চিত্তভরে স্মরণ করে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতে সাধারণ মানুষ উন্মুখ হয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই আগমন সেই সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিগত সময়ে যেসকল উন্নয়ন করেছে তার হাজারও উদাহরণ রয়েছে। এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা শুধু এ অঞ্চলের মানুষকে হতাশা দিয়েছেন।