খুলনায় নগদ অর্থসহ স্বর্নালংকার লুটের সময় বাড়ির তরুণীকে ধর্ষণ

চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহার করায় বাবা-মা ও মেয়ে গুরুতর অসুস্থ, মা ও মেয়ে খুমেকে ভর্তি, ধর্ষক আটক, মামলার প্রস্তুতি, ঘটনাটি ঘটতে না ঘটতেই গণমাধ্যমে মেয়েটির বাবার পদ-পদবী, ঠিকানা প্রচার মেয়েটির বিবাহের পথে অন্তরায় কি না বললেন বিশেষজ্ঞরা
স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীতে অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মকর্তা, তার স্ত্রী ও মেয়েকে অচেতন করে নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যাওয়া ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই পরিবারের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আড়াইটার দিকে তাকে প্রথমে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। তার মা অচেতন থাকায় তাকেও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে নগরীর হরিনটানা থানাধীন কৈয়া বাজারের পাশে ঘোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গোবিন্দ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছেন পুলিশ। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী বলেন, ওই মেয়েকে প্রাথমিকভাবে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ওসিসি’তে রেফার্ড করা হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাউথ) মো: তাজুল ইসলাম স্ংাবাদিককে জানান, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘোলা গ্রামের একটি বাড়ির ছাদের সিঁড়িঘর দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে তারা চেতনানাশক স্প্রের মাধ্যমে গৃহকর্তাকে একটি কক্ষে অচেতন করে রাখেন। একইভাবে তার স্ত্রীকে অচেতন করে লেপের মধ্যে পেঁচিয়ে রান্নাঘরে নিয়ে রাখেন। এরপর একইভাবে তার মেয়েকে অচেতন করা হয় এবং একজন তাকে ধর্ষণ করেন। তিনি জানান, ধর্ষণের পর দুর্বৃত্তরা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং র্যাব ও সিআইডির টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় দস্যুতা ও ধর্ষণের অভিযোগে হরিণটানা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে হরিনটানা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গোবিন্দ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ওই মেয়ের মা চেতনানাশক স্প্রেও কারণে গুরুত্বর অসুস্থ হওয়ায় তাকেও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম (সেবা) জানান, এই নির্মম ঘটনাটিকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনাটি ঘটার সাথে সাথেই গণ মাধ্যমের নীতিমালা লংঘন করে বিভিন্ন গণ মাধ্যমে মেয়েটির বাবার চাকুরির পদ পদবী, ঠিকানা প্রকাশ করে মেয়েটির বিবাহের পথে অন্তরায়সহ মেয়েটি সামাজিকভাবে হেয়, নিগৃহীত হবে কিনা তা নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সংশয় প্রকাশ করেছেন।