মোংলায় ঈগল ও নৌকার ৩০ সমর্থক আহত : বাড়িঘর-ভাংচুরের অভিযোগ

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা
বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিজয়ী ও পরাজিত উভয় প্রার্থীর কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন। ১৫টি বসতবাড়ি ও ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিজয়ী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের হাবিবুন নাহার ও পরাজিত আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতিকের ইদ্রিস আলী ইজারাদারের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের এবং নাজমুল নামের এক নৌকার সমর্থক গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বিষয়ে উভয় পক্ষ একের অপরকে দোষারুপ করছেন। পরাজিত প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের ভাইয়ের ছেলে ও সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ একরাম ইজারাদার বলেন, নির্বাচনের রাতেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার ও তার লোকজন ঈগলের কর্মীদের মারধর করেছেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা করেছেন। অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ি ভাংচুর করেছে তারা। মঙ্গলবার সকালেও রেবা আক্তার নামের এক নারীকে মারধর করেছে তারা। নির্বাচনের দিন রাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ২০ জনের বেশি কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন। সব থেকে বেশি অত্যাচার করছে সুন্দরবন ও সোনাইলতলা ইউনিয়নে। এমনকি ভোটের দিন রাতে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের বাড়িতে ইটপাটকেল মারা হয়েছে। নির্বাচন চলে গেছে, এখন আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই জনপ্রতিনিধি। তবে বেশি অত্যাচার হয়েছে মোংলায়। মোংলার সোনাইলতলা এলাকার রেজাউল সরদার ও মোহসীন সরদারসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১৫ জনের বসত ঘর এবং ৫ জনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে। এদিকে ঈগলের সমর্থকদের অভিযোগ অস্বীকার করে মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার বলেন, মূলত হেরে যাওয়ার পরে ঈগলের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের কর্মীদের উপর হামলা করে চলেছে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ১২ জন কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে নাজমুল নামের এক যুবক গুরুত্বর আহত হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমাদের কর্মীরা কোথাও কাউকে মারধর ও ভাংচুর করেনি। মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মোঃ শাহীন বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মারামারি সংক্রান্ত ১৩ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। মোংলা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন,অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি।কিছু সত্যতা পেয়েছি। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এখনও কোন পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।