সুনীল শুভ রায়কে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ায় খুলনায় জাপা পরিবার খুশি

আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
স্টাফ রিপোর্টারঃ জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়কে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ায় খুলনার জাপা পরিবারে আনন্দ বিরাজ করছে। চেয়ারম্যানের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে খুলনার জাপার নেতৃবৃন্দ। যারা চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছে তাদেরকে ধীক্কার জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। খুলনা জেলা জাপার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, শুনীল শুভ রায়কে দল থেকে অব্যাহতির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিনি তার সাথে একমত। তবে এ সিদ্ধান্তে বিপক্ষে যারা মিছিল মিটিং করেছেন তারা ঠিক করেননি। এটা গঠনতন্ত্র বর্হিভূত কাজ। এ জন্য মিছিল মিটিং করা নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। জেলা জাপার দপ্তর সম্পাদক রহমত আলী খান বলেন, গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করার জন্য চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ জন্য তিনি তাঁকে সাধুবাদ জানান। জাপা চেয়ারম্যানের ও দলের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে এই শুনীল শুভ রায় তাদের মধ্যে একজন। সে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের নাম ভাঙ্গিয়ে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এ লোকটির কারণে খুলনার জাপা রাজনৈতিকভাবে কখনও চাঙ্গা হতে পারেনি। তারই কুটকৌশলে খুলনার জাপা সব সময় অবহেলিত ও বঞ্চিত হয়। চেয়ারম্যান তাকে অব্যাহতি দিয়ে সময় উপযোগি কাজ করেছে। তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বটিয়াঘাটায় যারা মিছিল করেছে তারা শুনীল বাবুর কর্মচারি। তারা জাপার কোন নেতা-কর্মী নন। শুনীল বাবুর অন রিকোয়েস্টে এসব মানুষদের বটিয়াঘাটায় পদ পদবি দেয়া হয়। এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নেতাদের তিনি অনুরোধ জানান। খুলনা মহানগর যুবসংহতির সদস্য সচিব ও আড়ংঘাটা থানা জাপা সাঃ সম্পাদক মোঃ রাসেল হোসেন বলেন, শুনীল শুভ রায় কর্মীদের দুঃখের সময় থাকেন না। সুখের সময় ভাগ বসান। তিনি কর্মী বান্দব নেতা নন। তাকে অব্যাহতি দেয়ায় তিনি চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান। শুনীল বাবুকে অব্যাহতি দেয়ায় খুলনায় জাপায় কোন প্রভাব পড়বে না। কর্মীদের মনে তার কোন স্থান কখনও ছিল না এখনও নেই। জাপার প্রবীন রাজনীতিবিদ শাহ লায়েক উল্লাহ বলেন, চেয়ারম্যান দলের স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সাথে তিনি একমত। জেলা যুবসংহতির সাঃ সম্পাদক আলহাজ্ব ইসমাইল খান টিপু বলেন, শুনীল বাবুর মত কর্মীহীন একজন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ায় তিনি চেয়ারম্যানকে সাধুবাদ জানান। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী এই শুনীল শুভ রায় বিগত দিনে খুলনার জাপাকে ধ্বংস করেছে। কখন গড়েনি। নিজে চেয়ারম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কিন্তু কর্মীদের পিছনে এক টাকাও খরচ করেননি। বরং নানা অজুহাতে কর্মীদের কাছ থেকে আরো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যারা আন্দোলন করেছে তারা শুনীল বাবুর কর্মচারি ছাড়া আর কিছু নয় বলে এই নেতা দাবি করেন। যুবসংহতির নেতা গাজী মোশাররফ হোসেন বলেন, শুনীল শুভ রায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম এরশাদ সাহেবের নাম ভাঙ্গিয়ে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মনোনয়ন বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। নানা অজুহাতে কর্মীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার অব্যাহতির মধ্য দিয়ে দল কলংক মুক্ত হলো বলে তিনি দাবি করেন। খুলনার জাপাকে কোণঠাসা করে রেখে ফায়দা লুটে নিতো এই শুণীল শুভ রায়। তার বহিস্কারের মাধ্যমে জাপা খুলনার আরো চাঙ্গা হবে বলে তিনি মনে করেন। মহানগর জাপা নেতা এজাজ আহমেদ বলেন, চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আন্দোলন করা ঠিক হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারী জাপার যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কাজী ফিরোজ রশিদ ও সুনীল শুভরায়কে দলের কো-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য পদসহ দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন । ফিরোজ রশীদ ও সুনীল শুভরায়ের অব্যাহতি ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।এ ঘটনার প্রতিবাদে বটিয়াঘাটায় পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিছিল করে ও চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলিকা দাহ করে বটিয়াঘাটা উপজেলা জাপা নেতৃবৃন্দ।