কেশবপুরে জলাবদ্ধতার শঙ্কায় বগা খাল পুণর্খননে গ্রামবাসীর বাধা
# এলজিইডি’র অপরিকল্পিত খাল খনন #
# জনকল্যাণে না আসায় সরকারের গচ্চা ৯ লাখ টাকা #
আব্দুল মোমিন, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি ঃ এলজিইডির অপরিকল্পিত খাল খননে যশোরের কেশবপুরে বগা মহাদেবপুর খাল ভরাটের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এর প্রভাবে বর্ষায় খাল নালায় পরিণত হয়ে এলাকা প্লাবিত হবে। ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হবে ১০ গ্রামের হাজারও কৃষক। এ খাল খনন জনগণের কল্যাণে না আসায় সরকারের গচ্চা যাবে ৯ লাখ টাকা। অপরিকল্পিত খনন কাজ বন্ধে ২৪ জুন বগা মহাদেবপুর পানি ব্যবস্থাপণা সমবায় সমিতির পক্ষে আবুল কাশেম উপজেলা প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, কপোতাক্ষ নদের একটি সংযোগ খাল হলো বগা মহাদেবপুর খাল। বগা, মহাদেবপুর, মোমিনপুর, গৌরীপুর, সেনপুরসহ ১০ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি এখাল দিয়ে কপোতাক্ষ নদে নিষ্কাশন হয়। খালের পানি দিয়ে এলাকার কৃষকরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করেন। যুগ যুগ ধরে ওই সমিতির নেতৃবৃন্দ খালটি দেখভাল করেছেন। সমিতির আওতায় ইতোপূর্বে কয়েক বার সরকারিভাবে খালটি খনন হয়েছে। চলতি বছর সমিতিকে বাদ দিয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর বগা বিল খনন কাজ প্রকল্পের আওতায় খালটি পুণর্খননে প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করে ৯ লাখ টাকা। সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে ৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় খালটি খননের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মনিরুজ্জামান মনির। সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, খালটি ৫০ ফিট চওড়া হলেও খালের মাঝখানে মাত্র ৩.২৮ ফিট গভীর ও ১০ ফিট চওড়া করে খনন করা হচ্ছে। ঠিকাদার খাল খনন করতে গিয়ে খালের ঢাল দিয়ে স্কাভেটর মেশিন চলাচলের জন্যে খালের পাড় থেকে মাটি কেটে খাল ভরাট করছেন। এভাবে দুপাশ খনন করলে খাল নালায় পরিণত হবে। চলতি বর্ষা মৌসুমে বর্ষার পানিতে স্কাভেটর চলাচলের জায়গা ধসে খননকৃত অংশ ভরাট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ঠিকাদার খাল পাড়ের কৃষকদের কাছ থেকে উৎকোচের বিনিময়ে নতুন করে খালের পাড় নির্মাণ করছেন। পরে কৃষকরা পাড়ে কলাগাছ রোপণসহ দখল করে নিচ্ছে। এভাবে খাল অবৈধ দখলে চলে যাচ্ছে। অপরিকল্পিভাবে খাল খননের ফলে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে এলাকা প্লাবিত হবে। এ খাল খনন জনগণের কোনো কল্যানে আসবে না। শুধু শুধু সরকারের অর্থই গচ্চা যাবে। যে কারণে খনন কাজ বন্ধে অভিযোগটি করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ওয়ার্ক ওর্ডার অনুযায়ী ৩ মিটার বা ১০ ফিট চওড়া ও ১ মিটার বা ৩.২৮ ফিট গভীর করে খালটি খনন করা হবে। আমি সরেজমিনে ওই খাল খনন কাজ পরিদর্শন করেছি। ভরাটের আশঙ্কায় জনগণ খাল খননে বিরোধিতা করছে। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহাকারী ইঞ্জিনিয়র শফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসী অভিযোগ করায় গত ২৭ জুন বগা বিল খনন কাজ দেখতে ঘটনাস্থল পরির্দশন করা হয়েছে। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।