স্থানীয় সংবাদ

নীতিমালা বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ

দাকোপের ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় :

স্টাফ রিপোর্টার : উপযুক্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্বেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিদ্যালয় সমূহ)’র নীতিমালা বহির্ভূতভাবে একই প্রতিষ্ঠানের বিতর্কিত শিক্ষক শিকদার মনিরুজ্জামানকে খুলনার দাকোপ উপজেলার হোগলাবুনিয়া গ্রামের ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদানের জোর প্রচেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সচেতন বাসিন্দাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ কারণে অবিলম্বে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে উপযুক্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদানের দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় হোগলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার গাজী স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেছেন।
খুলনা জজকোর্টের আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম খানের মাধ্যমে গত ৮ জুলাই তিনি এ লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। নোটিশে নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে শিকদার মনিরুজ্জামানকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বাতিল করে বিধি মোতাবেক সরকারী নীতি মালার সকল শর্ত অনুসরন করে একজন যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে বলা হয়। অন্যথায় সরকারী নীতিমালার পরিপন্থী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে মামলা দায়ের করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়, দাকোপ উপজেলার হোগলাবুনিয়া গ্রামে ১৯৭৩ সালে ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। যা বর্তমানে সরকারী এমপিও ভুক্ত একটি সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১৯৯৫ সালের ২৪ অক্টোবর জারীকৃত জনবল কাঠামো সম্পর্কিত নীতিমালা এবং বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ পরিপত্রের ৯নং ক্রমিক ও শিক্ষা মন্ত্রালয়ের ২০০১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী (স্মারক নং- মাঃ ১১/বিবিধ- ৫/ ৯৪ (অংশ-৬) ১৭১ (২) শিক্ষা) মোতাবেক সকল পরীক্ষায় ২য় বিভাগ ও নট্রামস বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান হতে কম্পিউটারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হওয়া সত্বেও বি.কম ও এম.কম পরীক্ষায় ৩য় বিভাগের শিক্ষা সনদপ্রাপ্ত শিকদার মনিরুজ্জামানকে প্রতিষ্ঠানটিতে ২০০৫ সালের ৮ মার্চ বিধি বহির্ভূতভাবে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে উক্ত শিক্ষকের উপযুক্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্বেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিদ্যালয় সমূহ) এর নীতিমালা বহির্ভূতভাবে একই প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। যা সরকারী নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এমতাবস্থায় অত্র লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে উক্ত শিকদার মনিরুজ্জামানকে ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বাতিল করে বিধি মোতাবেক সরকারী নীতিমালার সকল শর্ত অনুসরন করে একজন যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রার্থীকে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করবেন। যা আইন ও ন্যায়ত কাম্য। অন্যথায় সরকারী নীতিমালার পরিপন্থী কোন পদক্ষেপ এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হলে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করা হবে। এ জন্য যাবতীয় আইনী খরচ বহন করতে হবে।
লিগ্যাল নোটিশের অনুলিপি যথাযথ প্রতিকারের জন্য খুলনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও দাকোপ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকেও প্রদান করা হয়েছে।
অপরদিকে, গত ৩০ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর প্রেরিত এক লিখিত আবেদনে আব্দুস সাত্তার গাজী ‘জাল সনদে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন’ শিরোনামে উল্লেখ করেন, ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০০৫ সালের ১২ মার্চ শিকদার মনিরুজ্জমান সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে যোগদান করেন। কিন্তু উক্ত পদে আবেদনের সময় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ বিষয়ক তার দাখিলকৃত সনদপত্রটি আইটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রদত্ত ছিল। যা সরকার অনুমোদিত কোন প্রতিষ্ঠান নয়। ফলে উক্ত সনদপত্রে এমপিওভূক্তিতে জটিলতা দেখা দেয়। সে কারণে তিনি টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড ঢাকা, কর্তৃক আরেকটি সনদপত্র দেখিয়ে ২০০৬ সালের ১ নভেম্বর এমপিওভূক্ত হন। অথচ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড ঢাকা, কর্তৃক উক্ত সনদ পত্রটি ইস্যু করা হয় এমপিওভূক্তির পরে অর্থাৎ ২০০৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। যে কারণে আবেদনের সময় সংযুক্ত সনদপত্রটি সম্পূর্ণ জাল এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তিনি উক্ত জাল সনদের মাধ্যমে এমপিওভুক্তিতে গ্রহণ করেছেন। এমনকি তার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ বিষয়ক দ্বিতীয় সনদটিও সঠিক কিনা সে ব্যাপারেও সন্দেহ রয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করে বিষয়টির যথাযথ তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button