দৌলতপুরের যানজট এখন চরমে !

# সংকীর্ণ সড়কে যানবাহনের যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামা
# যানবাহনের ট্রাফিক আইন ও নিয়মবর্হিভূত চলাচল: ঘরমুখি মানুষের ভোগান্তি #
মোঃ আশিকুর রহমান ঃ খুলনা নগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপশহর দৌলতপুর। তবে সম্প্রতি দৌলতপুর বাসীর নিত্যসঙ্গী এখন খুলনা-যশোর মহাসড়কের দীর্ঘতম যানজট, যা সকাল ও সন্ধ্যায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। দুপুরে কর্মশেষে ঘরমুখো কর্মজীবি, পথচারীসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ঘর হতে বের হওয়া মানুষের কাছে এই দীর্ঘ যানজট চরম ভোগান্তি ও বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে। একই সাথে সাধারন পথচারীদের রাস্তা পারাপারে দূর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাসহ একাধীক পথচারীদের অভিযোগ, সংর্কীন সড়কে যানবাহনের যত্রতত্র পাকিং ও যাত্রী ওঠানামা, যানবাহনের ট্রাফিক আইন ও নিয়মবর্হিভূত চলাচলের কারণে মূলতঃ দৌলতপুরে যানজট বাড়ছে। এছাড়া সড়কে চলাচলরত ভারী, মাঝারী ও ক্ষুদ্র যানবহন তথা মাহেন্দ্র, সিএনজি, ইজিবাইক, ইঞ্জিনের রিক্সা-ভ্যান ইচ্ছা-স্বাধীন চলাচলের কারণেও দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর হচ্ছে এই যানজট। একই সাথে দৌলতপুর ট্রাফিক মোড় সম্মুখ, বিএল কলেজ সম্মুখ, বাজার মোড় (আঞ্জুমান ঈদগাহ্) সম্মুখ, নতুনরাস্তা মোড় সম্মুখসহ মুহসীন মোড় চত্ত্বরে ইজিবাইক, সিএনজি, মাহেন্দ্রা, ইঞ্জিন চালিত ভ্যান-রিক্সার জটলা সর্বক্ষন লেগেই থাকে। কেএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ খুলনার যানজট নিরসনে নিরলস কাজ করলেও উপরোক্ত কারণ গুলোর শৃঙখলা ফিরছেনা সড়কে, মিলছেনা সুফল। তাই দৌলতপুর উপশহরকে যানজটমুক্ত উপশহর হিসাবে উপহার দিতে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাসহ দূর্ভোগ পোহানো পথচারীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পথচারী সালাম জানান, দৌলতপুর ট্রাফিক মোড় সম্মুখ, বিএল কলেজ সম্মুখ, বাজার মোড় (আজ্ঞুমান ঈদগাহ্) সম্মুখ, নতুনরাস্তা মোড় সম্মুখসহ মুহসীন মোড় চত্ত্বরে ইজিবাইক, সিএনজি, মাহেন্দ্রা, ইঞ্জিন চালিত ভ্যান-রিক্সার জটলা সর্বক্ষন লেগেই থাকে। সংর্কীন রাস্তায় এই যানবাহন গুলোর কারণে যানজট লেগেই থাকে। বিশেষ করে প্রতিদিন সকাল ৯টার পর ও সন্ধ্যার পর এই যানজট চরম আকার ধারন করে। এতে চলাচলে চরম অসুবিধা পোহাতে হয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করছি।
কোম্পানীর চাকুরীজীবি হেলাল জানান, কোম্পানীর চাকুরীর সুবাদে প্রতিদিন দৌলতপুর এলাকায় মার্কেটিংয়ের কাজ করতে হয়। প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর দৌলতপুর ট্রাফিক মোড় হতে আজ্ঞুমান ঈদগাহ পর্যন্ত লম্বা লাইন পড়তে দেখি যানবাহনের। তাছাড়া আঞ্জুমান ঈদগাহের সামনে এলোপাতাড়ি ইজিবাইক সড়ক দখল করে দাড়িয়ে থাকে। এরা এমনভাবে এলোপাতাড়ি ইজিবাইকগুলো রাখে যে কারণে সংর্কীন রাস্তা আরো সংর্কীন হয়ে পড়ে। ফলে একদিনে যেমন চলাচলে অসুবিধা হয়, অপরদিকে রাস্তার সরু হওয়ার কারণে দূর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। একই সাথে চালকেরা যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে, ইচ্ছা-স্বাধীন পার্কিং করছে। যানজট নিরসরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। মোটর সাইকেল আরোহী ডিপ্লোমা কৃষিবদি মো. মাফিজুর রহমান জানান, দৌলতপুর ট্রাফিক মোড় হতে মুহসীন মোড় হেটে যেতে সময় লাগে ৫/৭ মিনিট, যা বর্তমানে গাড়ীতে যেতে লাগছে ১৫ মিনিটেরও বেশি সময়। সন্ধ্যার পর এমনই জ্যাম লাগে দৌলতপুর মেইন সড়কে। জ্যামে পড়ে দিশেহারা হয়ে উঠছি। দৌলতপুর বাজারে সবজি কিনতে আসা সাহিদা নামের গৃহিনী জানান, দীর্ঘক্ষন রাস্তার আইল্যান্ডের উপর দাড়িয়ে আছি। গাড়ীর এতো চাপ রাস্তা পার হতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে অবশেষে ঝুকি নিয়ে রাস্তায় নেমে পার হতে হচ্ছে। ব্যবসায়ী পলাশ জানান, বর্তমানে সড়কে ছোট বড় যানবহনের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় রাস্তা সংর্কীন। সংর্কীন রাস্তার কারণে খুলনা যশোর মহাসড়কে সকাল-সন্ধ্যা যানজট লেগেই থাকে। ট্রাফিক বিভাগের এই দূর্ভোগ নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত। সাবেক কাউন্সিলর এসএম হুমায়ূন কবির জানান, বর্তমানে সড়কে যানবাহনের সংখ্য বেড়েছে। সড়কে চলাচলরত ভারী, মাঝারী ও ক্ষুদ্র যানবহন তথা মাহেন্দ্র, সিএনজি, ইজিবাইক, ইজ্ঞিনের রিক্সা-ভ্যান, দূরপাল্লার বাসগুলোর যাত্রী ওঠা নামার প্রতিযোগীতা, অনুমোদিত পার্কিং, অদক্ষ ড্রাইভারদের ইজিবাইক চালনাতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। খুলনার যানজট নিরসরে ট্রাফিক বিভাগের গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করা উচিত বলে আমি মনে করি। এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) আবুল বাশার মোহাম্মাদ আতিকুর রহমান জানান, খুলনার যানজট নিরসনে কেএমপির ট্রাফিক বিভাগ নিয়মিত কাজ করছে। যেহেতু দৌলতপুরের যানজট নিরসনের বিষয়ে বলা অবগত করা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহন করবো।