স্থানীয় সংবাদ

নগরীতে ডিবির বিশেষে অভিযানে আতঙ্কে অপরাধীরা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ চলতি মাসে নগরীর বিভিন্ন স্থানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলা, সংঘর্ষ, খুন ও লুটপাটের মতো ঘটনা নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছিল, তা আগের চেয়ে অনেকটা কমে গেছে। গত ১২ নভেম্বর কেএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগে ডিবির ওসি মো: তৈুমর ইসলাম যোগদানের পর থেকেই অপরাধীরা কিছুটা আত্মগোপনে চলে গেছেন। ডিবির সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ নভেম্বর কেএমপির ডিবিতে ওসি তৈুমর ইসলাম যোগদানের পর থেকেই তার নেতৃত্বে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে গত ১৭ নভেম্বর ওসি তৈমুর এর নেতৃত্বে নগরীর নাজির ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি. সহ বিভিন্ন ধরনের ধারালো দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ ডাবলু নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছেন। এরপর গত ১৮ নভেম্বর তার নেতৃত্বে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী আশিক গ্রুপ এর সহযোগী ও শুটার মো: ইব্রাহিম শিকদারকে আটক করে হয়। একই দিনে ডিবি ওসি তৈমুরের নেতৃত্বে আরও একটি অভিযান চালিয়ে নগরীর ফারাজীপাড়া এলাকা থেকে নগরীর খালিশপুর মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি ও বর্তমান যুবলীগ নেতা মো. ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। ফারুকের বিরুদ্ধে নগরীর খালিশপুর থানায় বিএনপি অফিস ভাঙচুরের মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার দুই ভাই আওয়ামী লীগ নেতা ও ১৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এসএম খুরশিদ আহম্মেদ টোনা এবং মোরশেদ আহম্মেদ মনিরের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। এর আগে ১৫ নভেম্বর ওই ওসির নেতৃত্বে চুরি কাজে ব্যবহৃত ইজিবাইক ও চুরি করা ব্যাটারিসহ তিনজনকে আটক করেছিলেন। যোগদানের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রুপের একজন শুটার, অস্ত্র ও চোর সংঘবদ্ধের চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার হওয়ায় অনেক অপরাধীরা এখন গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে তারা এখন কেউ প্রকাশ্যে অস্ত্র মহড়া বা হামলা সংঘর্ষ ঘটনা ঘটছে না। এই ডিবির ওসি তৈমুর ইসলাম কেএমপির গোয়েন্দা বিভাগে যোগদানের আগে নগরীতে একের পর এক হামলা সংঘর্ষ ও খুনের মতো ঘটনা ঘটে নগরীতেই। এর মধ্যে গত ৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ১১টায় নগরী সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন বসুপাড়া এতিমখানার মোড় এলাকায় পুর্ব শত্রুতার জের ধরে যোগে বাপ্পি, রিপন, ডলার, ইমরান. ইভানসহ অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচজনসহ মোট ১০ জন ফিল্ম স্টাইলে পাঁচটি মোটরসাইকেলে এসে মো: রফিকুল ইসলাম মুক্তা (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে তার স্ত্রীর সামনে টেনে হিঁচড়ে বের করে ৩ রাউন্ড গুলি করে যার কোনটিই অলৌকভাবে রফিকুল ইসলাম মুক্তার গায়ে লাগেনি। এরপর তারা এর আগে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে মুক্তাকে। গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে রাসেল ওরফে পঙ্গু রাসেল (২৭) দুর্বৃত্তের গুলি ও কোপের আঘাতে নিহত হয়। মহানগরীর শেরেবাংলা রোডস্থ আলকাতরা মিলের পার্শ্বে ১ নং গলির প্রবেশপথে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে ও চাপাতি দিয়ে হত্যা করে। এসময় তার সাথে থাকা সদর হাসপাতালের পিছনের হুমায়ুন কবিরের ছেলে মোঃ সজিব (২৫) ও শেরেবাংলা রোড আমতলার মোড়ের মোঃ হান্নান শেখের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াসিনকে (২৬) ধারালো চাপাতির কোপে রক্তাক্ত জখম করে। গত ৩ নভেম্বর সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন খুলনা জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মো: হাবিবুর রহমান বেলাল। আহত বেলাল খুলনা জেলা স্কুল এলাকার বাসিন্দা জনৈক আ: লতিফের ছেলে। জানা যায়, ওই দিন রাত দেড়টার দিকে বেলাল মোটরসাইকেলযোগে কমার্স কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন। ডা: মিজানুর রহমানের চেম্বারের সামনে পৌঁছামাত্র পেছন থেকে ২ থেকে ৩ টি মোটরসাইকেল তার গতিরোধ করে। মোটরসাইকেলে থাকা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রদিয়ে বেলালের বাম হাতের কব্জিতে ও ডান হাটুতে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এর আগে খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খুলনাঞ্চল পত্রিকার অফিসের সামনে থেকে লাল টেপে মোড়ানো ককটেল উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওই ডিবির ওসি তৈমুর ইসলাম এখন অপরাধীদের কাছে একটি আতংকের নাম হিসেবে পরিচিত। কারণ সে আশার পর থেকেই একের পর এক অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করছেন। যার কারণে অনেকে অপরাধীরা এখন প্রকোশ্য না এসে গা ঢাকা দিয়েছেন।
কেএমপি ডিবি পুলিশের ওসি মো: তৈমুর ইসলাম বলেন, নগরীতে আইন শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে যা যা করার দরকার আমরা সে সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে নগরীতে কিশোর গ্যাং, অস্ত্র বাজ, মাদক ব্যবসায়ী, চোর সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন অপরাধীদের ধরতে আমাদের টিম সব সময় মাঠে আছে। অপরাধীদের সাথে যার সম্পৃক্ততা পাবো তাদের কোন ছাড় নেই। সে যেই হোক না কোনো।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button