কয়রায় শীত মৌসুমেও দেখা মিলছেনা অতিথি পাখি
# জলবায়ু পরির্তনের প্রভাব #
রিয়াছাদ আলী, কয়রা (খুলনা) ঃ উপকূলীয় জনপদ কয়রা অঞ্চলে শীত মৌসুমেও এই বছর এখনো উল্লেখ্যযোগ্য অতিথি পাখির বিচরন দেখা যাচ্ছে না। বিগত ৫/৭ বছর আগে শীত মৌসুমে এ সময় ঝাকে ঝাকে অতিথি পাখির বিচরন দেখা গেলেও এ বছর হঠাত করে এ অতিথির পাখির আসা আর চোকে পড়ছে না। পাখি বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনই অবস্থা বলে মনে করছেন। তাদের মতে উপকুলীয় অঞ্চলে শীত মৌসুমে অবাধ অতিথি পাখি বিচরন করে থাকে। এ বছর এ সকল অঞ্চলে আর ঐ পাখি দেখা যাচ্ছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনে সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় কয়রা এলাকায় পানি থেকে শুরু করে জমি পর্যন্ত সর্বত্রই লবনাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবেশের লবনাক্ততার প্রভাব ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যতার কারনেই অতিথি পাখি কম আসছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কয়রা উপজেলার, দক্ষিন বেদকাশি ইউনিয়নের ঘড়িলাল, আংটিহারা, বিনাপানি, শিংএর টেক, মেদেরচর, উত্তর দেকাশি ইউনিয়নের গাজিপাড়া, পাথরখালি, কাটকাটা, কাঠমারচর, গাববুনিয়ার চর, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৬নং কয়রা, গোবরা, মহারাজপুর ইউনিয়নের পবনা, বাওলিয়াঘাটা, কয়রা নদীরচর, হায়াতখালী, মঠবাড়ী, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের তেতুলতলার চর, নয়ানী, হড্ডা, সরদাঘাট, বানীয়াখালী, বাগালী ইউনিয়নের হোগলা, শেওড়া, বাশখালী, ঠাকুরেরচক, আমাদী ইউনিয়নের জায়গীরমহল, ভান্ডরপোল, চান্নিরচক, বালিয়াডাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর হাজার হাজার অতিথি পাখি আসতে দেখা যেতো এই শীত মৌসুমে। কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের বয়বৃদ্ধ আব্দুল মাতিন সানা বলেন, এ বছর তার এলাকায় গুটিকয়েক পাখি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উত্তর বেদকাশি ইউপি সদস্য আবু হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবতনের ফলে এ অঞ্চলে লবনাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। ইতিমেধ্য পরিবেশে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়াও দেখা যাচ্ছে। এসব কারণে অতিথি পাখি কম আসছে। তাছাড়া নদী বেষ্ঠিত এলাকায় লবন পানির মৎস্য ঘের হওয়ায় পাখির বিচরন এলাকা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এ সমস্যা বলে তিনি মনে করেন। একটি সমিক্ষায় জানা গেছে, বিগত দিন গুলিতে উপকূলীয় এলাকায় আইলা, সিডর ও নারগিস, ইয়াস, রিমালের আক্রমণের পর উপকূলীয় এলাকার পাখির আবাসস্থল বলে পরিচিতি এলাকাগুলোতে বেশির ভাগ গাছ পালায় লবনাক্ততার কারণে মারা যেতে দেখা গেছে। এ সমস্ত কারনে কোথাও আগের মতো তেমন কোন ঝোপ ঝাড় নেই। এজন্য পাখি আসছেনা। সরে জমিনে কয়রার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে সাধারন মানুষের সাথে বললে তারা জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই এলাকাগুলোতে লবনাক্ততা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া গাছের মড়ক লেগেই আছে। আর এর কারনেই উপকুলীয় অঞ্চলে অতিথি পাখির বিচরন কম বলে মনে করেছেন। এ জন্য তারা অতিথি পাখি টিকিয়ে রাখতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়েছে। পাথরখালী মিলনী যুব সংঘের সভাপতি অভিজিত মহলদার বলেন, পাখরখালী ক্লোজারে ক্লাবের পক্ষ থেকে পাখি সংরক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সেই জন্য কিছু পাখি দেখা মিলছে। তিনি সরকারের পাশাপাশি ন্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের মাধ্যমে পাখি সংরত্ষনের দাবি জানান।