খেলাধুলা

কুমিল্লাকে উড়িয়ে প্লে অফে বরিশাল

স্পোর্টস ডেস্ক : আগের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে টেবিলের দুই নম্বরে উঠে প্রথম কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেই হিসেবে এদিনের ম্যাচটি তাদের জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না! তবে ফরচুন বরিশালের জন্য ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। হেরে গেলেই প্লে অফে খেলা শঙ্কায় পড়ে যেত তামিম ইকবালের দল। কিন্তু সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে দলকে প্লে অফে তুললেন তামিম। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বরিশালের দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রানে থামে কুমিল্লার ইনিংস। ১৪১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তামিমের চমৎকার হাফ লসেঞ্চুরিতে ২ বল আগেই ৬ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল। ৬৬ রানের ইনিংস খেলা তামিম হয়েছেন ম্যাচসেরা। চতুর্থ দল হিসেবে বরিশাল প্লে অফ নিশ্চিত করায় এদিন সন্ধ্যায় সিলেট স্টাইকার্স ও খুলনা টাইগার্সের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচটি গুরুত্ব হারায়। এটি কেবল নিয়ম রক্ষার ম্যাচ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কুমিল্লার দেওয়া ১৪১ রানের লক্ষ্যটা বরিশালের জন্য সহজই ছিল। লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে নামা বরিশালের ওপেনিং জুটি আজও ক্লিক করতে পারেনি। ৭ বলে ১ রান করে আহমেদ শেহজাদ যখন বিদায় নেন, বরিশালের দলীয় রান তখন ১০। দ্বিতীয় উইকেটে কাইল মায়ার্সকে নিয়ে তামিম গড়েন ৬৪ রানের জুটি। মায়ার্স ২৫ বলে ২৫ রান করে আউট হওয়ার পর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তামিম গড়েন আরও ৩৯ রানের জুটি। কুমিল্লার পেসার মুশফিক হাসানের চমৎকার এক ডেলিভারিতে ১৭ রানে আউট হন মুশফিক। ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে আন্দ্রে রাসেলকে সোজাসুজি বিশাল এক ছক্কা মেরেছিলেন তামিম। পরের বলেও লেগ সাইডে সজোরে মেরেছিলেন। কিন্তু দৌঁড়ে এসে তাওহীদের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নিতে হয় তামিমকে। তার আগে তুলে ফেলেন চলতি বিপিএলের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ৬৬ রানের ইনিংস খেলে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তালিকার শীর্ষেও উঠে যান অভিজ্ঞ এই ওপেনার। ৪৮ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় বাঁহাতি ওপেনার নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। ১২ ম্যাচে দুই হাফ সেঞ্চুরিতে তামিমের চলতি আসরের রান ৩৮৪। তামিম আউট হওয়ার পর বাকি পথটা অনায়াসেই পাড়ি জমান মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্য সরকার। নেমেই প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ কমিয়ে দেন সৌম্য। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৯ রানের জুটিতে ২ বল আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল। মাহমুদউল্লাহ ১১ বলে ১২ এবং সৌম্য ৩ বলে ৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে মুশফিক হাসান ১৯ রানে দুটি এবং মোহাম্মদ এনামুল ও আন্দ্রে রাসেল একটি করে উইকেট নিয়েছেন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। দলে দারুণ সব ক্রিকেটার থাকলেও কাউকেই সুযোগ দেয়নি বরিশালের বোলাররা। নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে দলটি। সাত নম্বরে নামা জাকের আলী অনিকের ১৬ বলে অপরাজিত ৩৮ রানের ক্যামিও ইনিংসের কল্যাণে দলটি কোনোরকমে ১৪০ রান করতে পারে। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ফিনিশিং রোলে ভালো ভূমিকা রেখেছেন জাকের আলী। ২ চার ও ৪ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান এই তরুণ। এর আগে কুমিল্লার টপ অর্ডার কিংবা মিডল অর্ডার কেউই থিতু হতে পারেননি। সুনিল নারিন ও লিটন দাস ইনিংসের উদ্বোধন করলেও সেটি বড় হয়নি। দলীয় ২৪ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন নারিন (১৬)। লিটনও বেশিদূর যেতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১২ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন। চলতি বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান তাওহীদ হৃদয় কিছুটা লড়াই করলেও ২৫ রানে আউট হন। এর বাইরে মঈন আলী ২৩ এবং আন্দ্রে রাসেল ১৪ রানের ইনিংস খেলে দলের স্কোরবোর্ড ১৪০ রানে নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখেন। ২০ রানে তিন উইকেট নিয়ে বরিশালের সেরা বোলার তাইজুল ইসলাম। এ ছাড়া সাইফউদ্দিন ও ওবেদ ম্যাককয় দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি উইকেট নেন আকিফ জাবেদ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button