খেলাধুলা

বিতর্কিত সেই আউটের ছবি পোস্ট করে যা বললেন মুশফিক

স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচ শেষে প্রাইম ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাননি কেউ। বিতর্কিত আউট নিয়ে তাদের ভাবনাও জানা যায়নি। তবে ম্যাচের পরদিন সকালে সামাজিকমাধ্যমে ইঙ্গিতপূর্ণ একটি পোস্ট করলেন সেই আউটের শিকার হওয়া ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। শুক্রবার সকালে নিজের ফেইসবুক পাতায় একটি ছবি পোস্ট করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান, যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ক্যাচ নেওয়া ফিল্ডারের পা স্পর্শ করেছে সীমানা দড়ি। সেই জায়গাটুকু লাল দাগে চিহ্নিত করে মুশফিক ¯্রফে লিখেছেন, ‘মা শা আল্লাহ।’ পাশে তিনটি ইমোজিও ছিল, যেগুলোতে ফুটে ওঠে হতাশা বা বিরক্তি কিংবা বিষাদ। এই ম্যাচে খেলা আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রুবেল হোসেন এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করেন, “খুবই দুঃখজনক ভাই।” ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে বৃহস্পতিবার মুশফিকের ওই আউট ঘিরে বিতর্কে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খেলা বন্ধ ছিল ১৩ মিনিটের মতো। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের রান তাড়ায় ৩৪তম ওভারের ঘটনা সেটি। অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে স্লগ সুইপ খেলেন মুশফিক। স্কয়ার লেগ থেকে বাঁদিকে অনেকটা দৌড়ে ফুল লেংথ ডাইভ দিয়ে বল তালুবন্দি করেন আবু হায়দার। তবে ইউটিউব রিপ্লেতে দুটি অ্যাঙ্গেল থেকে স্পষ্ট ধরা পড়ে, ক্যাচ নিয়ে গড়িয়ে পড়ার পর উঠে যাওয়ার সময় আবু হায়দারের পা স্পর্শ করে সীমানা দড়ি। এমনকি দড়ি একটু সরেও যায় তার পায়ে লেগে। আউট ভেবেই মাঠ ছাড়ছিলেন মুশফিক। কিন্তু ততক্ষণে ইউটিউবে রিপ্লে দেখে বাইরে থেকে মুশফিককে থামতে বলেন সতীর্থদের কেউ। তিনি মাঠে দাঁড়িয়ে যান। প্রাইম ব্যাংকের ক্রিকেটাররা সীমানার পাশে জড়ো হন সবাই। ফোনে রিপ্লে দেখতে থাকেন অনেকে। সীমানার পাশ থেকে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তামিম ইকবালকে। প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক জাকির হাসান তখন ক্রিজেই ছিলেন। তিনিও কথা বলেন আম্পায়ারদের সঙ্গে। মাঠে মুশফিককেও বেশ উত্তেজিত দেখা যায়। আবু হায়দারকে বারবার দেখা যায় জাকির ও আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলতে। দুই আম্পায়ার এআইএম মনিরুজ্জামান ও সাথিরা জাকির জেসি নিজেদের মধ্য আলোচনার পাশাপাশি দুই দলের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। একসময় আম্পায়ার মনিরুজ্জামান আঙুল উঁচিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিককে। এই ঘটনায় আম্পায়ারদের দিকে আঙুল তোলার উপায় খুব একটা নেই। মাঠের মাঝখান থেকে সীমানার ঘটনা তাদের বোঝার উপায় ছিল না। বিসিবির ইউটিউব চ্যানেলে খেলা সম্প্রচার করা হলেও এসব ম্যাচে তৃতীয় আম্পায়ার নেই। ইউটিউবে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগ তাদের নেই। নিয়ম অনুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে পুরোপুরিই ফিল্ডারের সততার ওপর নির্ভর করতে হয় তাদের। মাঠে উপস্থিত থাকা ক্রিকেটারদের কয়েকজন জানিয়েছেন, আবু হায়দার তখন বলছিলেন যে, তিনি নিশ্চিত নন যে তার পা দড়িতে লেগেছে কি না। খেলা বন্ধ থাকার সময়টায় প্রাইম ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভিডিও দেখানো হয় মোহামেডানের ম্যানেজমেন্টকে। কিন্তু তারা আবেদন তুলে নেননি। আম্পায়ারদের এরপর আর কিছু করার ছিল না।ঘটনার সময় আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল যাকে, সেই তামিম ইকবালও এখানে আম্পায়ারদের দায় দেখছেন না। “আম্পায়ারদের এখানে আসলে কিছু করার নেই। তারা নিয়ম অনুযায়ীই কাজ করেছেন। আমরা হতাশ ও অবাক হয়েছে প্রতিপক্ষের কাজে। ফিল্ডার দাঁড়ানোর সময় পা লেগেছে দড়িতে, তার বোঝার কথা। তাছাড়া ভিডিওতেও পরিষ্কার যে দড়ি সরে গেছে। খুবই বিস্ময়কর ব্যাপার যে, তারা (মোহামেডান) নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তেই অটল ছিল।” দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মুশফিক আউট হয়ে যান ১০ রান করে। ৩১৮ রান তাড়ায় প্রাইম ব্যাংক ম্যাচটি হেরে যায় ৩৩ রানে। এই ঘটনায় অবশ্য এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রাইম ব্যাংক।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button